আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সুন্দরবনের ভারত অংশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
মুখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানান, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক বছর লেগে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, সুন্দরবনের গহীনে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ‘সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ’ এরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়।
একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে হাজার হাজার গাছ ধ্বংস হয়েছে, তেমনই ভেঙ্গে গেছে বহু নদী বাঁধ, বনপ্রহরীদের শিবির বা অরণ্যের ভেতরে থাকা বন বিভাগের ছোট ছোট দপ্তর।
সুন্দরবনের কোর এরিয়ায় এখনও পৌঁছনো সম্ভব না হলেও ড্রোনের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে যে ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের চারণভূমি এবং পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ আর ম্যানগ্রোভ অরণ্য।
পশ্চিমবঙ্গ বন বিভাগ জানায়, অরণ্য ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি বনবিভাগের পরিকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে,। কোর এরিয়ার চারদিকে ১৩২ কিলোমিটার জুড়ে যে নাইলনের জাল দেওয়া ছিল, যাতে বনের বাঘ লোকালয়ে চলে না আসতে পারে, তা ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণ উড়ে গেছে।
এছাড়াও জঙ্গলের ভেতরে থাকা বনবিভাগের রেঞ্জ অফিস, বিট অফিস, রক্ষীদের শিবির, সেখানে থাকা রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা, জেটিও নষ্ট হয়েছে অনেক।
সুন্দরবনের ভেতরে বহু এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে পাশ্ববর্তী এলাকায় এখন লবণাক্ত জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। সুন্দরবন লাগোয়া শত শত গ্রামে যেমন বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, তেমনই লবণাক্ত জল দাঁড়িয়ে থাকায় বোরো ধান কীভাবে চাষ করা হবে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
কোর এরিয়ায় ক্যামেরা লাগানো ড্রোনের সাহায্যে বোঝা গেছে যে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছের সংখ্যা বিপুল।
তবে মমতা ব্যানার্জি গাছ এবং পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও বাঘ সহ বন্যপ্রাণীদের ক্ষতি এখনও বনবিভাগের নজরে আসেনি।
পরিবেশবিদরা বলছেন, যে হারে নির্বিচারে জঙ্গল কেটে বসতি বানানো হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে সুন্দরবন এরকম বুক পেতে ঝড় আটকাতে পারবে না। এর আগে আইলার সময়ে একবার আর এবার আরও বড় ক্ষতি হল সুন্দরবনের। সকলের উচিৎ সুন্দরবনকে রক্ষা করা এবং সংরক্ষণ করা।
সান নিউজ/ বি.এম.