নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঘূর্ণিঝড় কিংবা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান ভরসাস্থল হচ্ছে নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্র। কিন্তু বাংলাদেশে যেখানে দুর্যোগ প্রবণ এলাকার তুলনায় আশ্রয়কেন্দ্র কম, সেখানে এই করোনাকালীন সময়ে মানুষ চরম অসহায়। একসাথে দু’দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কি করবেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা? সরকারই বা কি চিন্তা করছে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে?
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ বলছেন, "এই সময়ে সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে আশ্রয় নিতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য। সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাটা সব সময় সম্ভব নয়। আর কোন সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় পাওয়া যাবে সেটিও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।"
"মানুষ এবং গবাদিপশুর মৃত্যুহার কমাতে গেলে সাইক্লোন শেল্টারের কোন বিকল্প নেই। তবে এই সময়ে কে করোনা আক্রান্ত এবং কে সুস্থ তা বুঝা সম্ভব নয়। এতে করে চরম সংক্রমণ ঝুঁকি তৈরি হবে। তিনি আরো যোগ করেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময় মানুষের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছানো, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা সেটাও হবে অতিমাত্রায় চ্যালেঞ্জিং। কারণ, ঘূর্ণিঝড়টি এমন একটা সময় আসছে যখন একদিকে করোনাভাইরাস মহামারি চলছে, আর অন্যদিকে চলতি বছরের বাজেটেরও শেষ মুহূর্ত চলছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে যে, সরকারের যে মজুদ বা গচ্ছিত অর্থ আছে তা অল্প কিছু মানুষের মধ্যে দেয়া যাবে। "আর সেটি না হলে, নতুন বাজেটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে," তিনি বলেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় 'আম্ফান'এর পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপকূলীয় জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ স্কাউটস এর মধ্যে বৈঠক করছে। তাদের প্রথম প্রাধান্য হচ্ছে সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা।
কোভিড-১৯ এর কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা মাথায় রেখেই সংশ্লিষ্ট এলাকার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হবে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য কে কোন আশ্রয়কেন্দ্রে যাবে তারও তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে, নিকটস্থ পাকা স্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই তালিকা প্রস্তুত করা হবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছেন এবং অনেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন।