নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা : সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের একমাত্র অভয়ারণ্যে চলছে গোলপাতা আহরণ উৎসব। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে পারমিট দেওয়া শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত গোলপাতা আহরণ চলবে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, প্রতি বছরের ডিসেম্বরে শুরু হয় গোলপাতা আহরণ মৌসুম। তবে এবার ভরা মৌসুমে বাওয়ালিদের বিএলসি (পারমিট) দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে ছিল বন বিভাগ। সর্বশেষ প্রথম দফায় ১ লাখ মণ গোলপাতার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খুলনা রেঞ্জের একটি এলাকা থেকে আহরণের পারমিট দেয় বন বিভাগ।
তার মধ্যে প্রথম দফায় বাওয়ালিরা গোলপাতা আহরণে ১৪৫টি বিএলসির অনুকূলে ৭০ হাজার ১২৮ মণ গোলপাতা সংগ্রহের পারমিট নিয়েছেন। কয়রার খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আর আগের মতো গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় গেল বছরের গোলপাতা রয়ে গেছে অনেক খুচরা বিক্রেতার আড়তে।
সুন্দরবনে নষ্ট হচ্ছে গোলপাতা : বাওয়ালিদের দাবি, গোলপাতা আহরণে যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা লাগে সেই তুলনায় একেবারেই ব্যবসা নেই।বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন জানান, তিনি প্রতিটি স্টেশন ও এলাকায় নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি (পারমিট) নবায়নের অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি এলাকায় নৌকার সঙ্গে মিল রেখে গোলপাতা কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবনে নষ্ট হচ্ছে গোলপাতা। অভয়ারণ্যসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মণ পাতা নষ্ট হচ্ছে। বনের কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, যেসব স্থানে গোলপাতার প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে সেসব স্থানে গোলগাছের পাতা মরে যাচ্ছে। এক জায়গায় অধিক গাছ হওয়ার কারণে এসব গাছের পাতার এমন অবস্থা। কোনও কোনও গাছে মাইজ পাতা (মধ্যখানের শিশু পাতা) বাদে সব পাতাই নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা ও বাওয়ালিরা বলছেন, পাতা না কাটার কারণেই নষ্ট হচ্ছে। এতে ফল প্রদানের পরিমাণও কমে যাবে গাছের।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ বিভাগের আওতায় এখন মাত্র দুটি কূপ থেকে চলে গোলপাতা আহরণ। পূর্বে এ বিভাগ থেকে আড়ু শিবসা, শিবসা এবং ভদ্রা এ তিনটি এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জের সাতক্ষীরা কূপ থেকে গোলপাতা আহরণ করা হতো। বর্তমানে তিনটি স্থানই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, আগে প্রায় ১ হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ করত। এখন তা কমে ২৫০-এ নেমে এসেছে।
সান নিউজ/খায়রুল/এসএ