নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) থাকবে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহের আওতায়। এ সময় এসব অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। দেশের অন্যত্র রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে তবে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরেই থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পর্যন্ত একটি ঠাণ্ডা বায়ুপ্রবাহ বিরাজ করছে। এই বায়ুপ্রবাহ বাংলাদেশে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তসংলগ্ন এলাকাগুলোর কাছাকাছি রয়েছে বলে কেবল সীমান্ত অঞ্চলগুলোতেই মূলত তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশব্যাপী ঠাণ্ডা এ পরিবেশ আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মঙ্গলবারের পর থেকে তাপমাত্রা উপরের দিকে উঠতে শুরু করবে। আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকে আসতে পারে।
ডিসেম্বরের এ সময়ে দেশের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে একটি ঠাণ্ডা বায়ুপ্রবাহ বয়ে যায় প্রতি বছরই। এটা আসে হিমালয়ের ওপার থেকে। হিমালয়ের ওপারে ডিসেম্বরের এ সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে। তুষার পড়তে শুরু করে। ওই ঠাণ্ডা বায়ু আমাদের এ অঞ্চলে আসতে পারে না হিমালয় পর্বতশ্রেণীর বাধার কারণে। যেটুকু আসে তাতেই বাংলাদেশের মানুষের অসহনীয় হয়ে যায়। ছিন্নমূল মানুষের বাড়তি কষ্টের কারণ হয় এ শীতল তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, শীতের এ সময়ে উপরের দিকে ৬৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১০০ কিলোমিটার) বেগে জেট উইন্ড নামক প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে যায়। এ বাতাসে কোনো আর্দ্রতা থাকে না, এটা খুবই শুষ্ক থাকে। বাতাসের চাপ যদি উপর থেকে নিচের দিকে বেশি থাকে তাহলে এই জেট উইন্ড কিছুটা নিচের দিকে নেমে আসে। তখন শীতের মাত্রা বাড়ে। এ সময় সাইবেরিয়ার দিক থেকে এই ঠাণ্ডা বাতাসটা আসে। এ বাতাস ভারতের দিল্লি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এসে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটি অংশ উত্তর-পূর্ব দিকে চলে যায়। তখন সিলেট বিভাগের দিকে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। আরেকটি অংশ রংপুর অঞ্চলের দিকে অপেক্ষাকৃত নিচের দিক দিয়ে বয়ে যায়। সে অঞ্চলের তাপমাত্রাও কমে যায়। এ সময় যদি বঙ্গোপসাগর অথবা আরব সাগরের দিকে থেকে আর্দ্রতা নিয়ে কিছু বাতাস চলে আসে তখন শীতের এ সময়েও তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। আর্দ্রতাযুক্ত বাতাস আমাদের আকাশে থাকলে আকাশে কিছু মেঘ জমে।
মেঘের কারণে নিচের তাপমাত্রা উপরে উঠতে পারে না। আবার উপরের জেট উইন্ডের ঠাণ্ডা বাতাস নিচে নেমে আসতে পারে না ওই মেঘের কারণেই।
শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ডিমলায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রাজশাহী, রংপুর অঞ্চলের সর্বত্রই গতকাল নিম্ন তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে কম ছিল। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ ছিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অঞ্চলগুলো। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সান নিউজ/এসএম