মো. মাজহারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা: ব্যাপক তাণ্ডব চালানোর পর ঘূর্ণিঝড় রেমালের ভয়াবহতা আর না থাকলেও সাতক্ষীরায় ভারী বৃষ্টির সাথে বইছে প্রচন্ড দমকা হাওয়া।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ে হাতিয়ায় ১৪ গ্রাম প্লাবিত
সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকেই হওয়া ভারী বৃষ্টির জন্য অনেকটা গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।
গতকাল উপকূল এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। তবে ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে সুন্দরবনের ঘন গাছপালা।
আজ দিনভর ঝড়-বৃষ্টির কারণে উপকূলীয় এলাকার নদ-নদী এখনো উত্তাল রয়েছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গতকাল রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে।
রোববার (২৬ মে) রাতে সাতক্ষীরা উপকূলের বুড়িগোয়ালীনি এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা রমেছা খাতুন, আজিজ সরদারসহ অনেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল জেলাজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক ফলজ বৃক্ষ উপড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: দুর্গত এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
এলাকার কয়েকটি মাছের ঘের জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। তবে বরাবরের মতো এবারও সুন্দরবন তাদের রক্ষা করেছে। বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার মাসুম হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতাপনগর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বাতাসে নদীর পানিতে বড় বড় ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে ভাটার টানে পানি কমলেও নিম্ন এলাকার বৃষ্টির পানি নদীতে পড়ে ফের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শ্যামনগরের সাবেক প্রকৌশলী শেখ আফজাল বলেন, রেমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত বলা যায়। তবে সুন্দরবন এলাকার নদ-নদী এখনো উত্তল রয়েছে।
হালকা ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকায় নদ-নদীতে ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। শুধু বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
আরও পড়ুন: তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের বেশিরভাগ এলাকা
শ্যামনগরের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছগাছালি উপড়ে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
এখনো ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে। নদ-নদীগুলো এখনও উত্তাল। জোয়ারের পানি এখনও কমেনি। বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ভাটিতে পানি কমার কথা থাকলেও পানি কমছে না। এতে অনেক এলাকায় বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জানা যায়নি।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা অতিক্রম করেছে। রাত ১টায় এখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। সন্ধ্যা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এ জেলায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এখনও ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত আছে।
সান নিউজ/এনজে