নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ রক্ষায় রাজধানীসহ সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধ করতে ও অতি প্রয়োজনে গাছ কাটার অনুমতি প্রদানে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭ বিভাগে বৃষ্টির আভাস
রোববার (৫ মে) জনস্বার্থে এ রিট পিটিশন দায়ের করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সংগঠনটির পক্ষে রিটটি দায়ের করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
সম্প্রতি অত্যধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে- মর্মে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন রিট পিটিশনে সংযুক্ত করা হয়।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া গেলেন বিমানবাহিনী প্রধান
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকায় পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে। সম্প্রতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এতে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
অপরদিকে সামাজিক বনায়ন চুক্তিতে সারা দেশে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলায় পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে, যা বন্ধ না হলে বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে এবং মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
রিটে যেসব নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে-
(১) গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিজ্ঞানী, প্রফেসর, পরিবেশ বিজ্ঞান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর পরিবেশ বিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকায় গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করবে।
(২) গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি ও সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন নেভাতে যোগ দিল ৩ বাহিনী
(৩) গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড ও এলজিইডি এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারে সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।
(৪) কমিটি গঠন হওয়ার আগ পর্যন্ত সব বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয়, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ চাওয়া হয় এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দাখিল নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে সংঘর্ষ, বাস চলাচল বন্ধ
(৫) গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ দেয়ার বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।
রিট পিটিশনাররা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মো. এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে আধুনিক করে তোলা হচ্ছে
বিবাদীরা হলেন- সচিব, কেবিনেট বিভাগ; মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়; সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়; সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়; সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ; ডিরেক্টর জেনারেল পরিবেশ বিভাগ; মেয়র, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন; প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডি, প্রধান বন সংরক্ষক; প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক মহাসড়ক বিভাগ ও আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশ।
সান নিউজ/এনজে