নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: নারীপাচারের অভিযোগে ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ইভান শাহরিয়ার সোহাগের সঙ্গে বরিশালের নৃত্যশিল্পীদের জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি করেন বরিশাল নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও নৃত্যাঙ্গন নৃত্যকলা একাডেমির পরিচালক মুরাদজ্জামান খান।
মুরাদ দাবি করেন, বরিশাল থেকে সরাসরি গত ১০ বছরে কোনো নৃত্যশিল্পী ব্যক্তিগতভাবে প্রবাসে যাননি। যেসব শিল্পী গ্রুপের সঙ্গে গেছেন, তারা ফিরেও এসেছন। এর বাইরে শিল্পকলা একাডেমিসহ সরকারি বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশে গেছেন, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিয়ম-কানুন অনেকটাই কঠোর। ফলে ওইসব ভ্রমণে বিদেশে থেকে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন মুরাদ।
তিনি বলেন, ‘খেলাঘর থেকেই আমার নাচ করা শুরু। বরিশালের ছেলে নৃত্যশিল্পী ইভান শাহরিয়ার সোহাগ জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত। আমিসহ বরিশালের বহু নৃত্যশিল্পী ছোটবেলা থেকে ইভানের সঙ্গে নাচ করেছি।’
‘তিনি ঢাকায় যাওয়ার পর তার মতো করে ধাপে ধাপে একটি অবস্থানে চলে গেছেন। তারপর একজন বন্ধু হিসেবে সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। আর তাও একজন বন্ধু হিসেবে যে সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন সেটা ছিলো, তবে ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে নয়।’
তিনি বলেন, ‘সোহাগের বর্তমান ঘটনাটি আমরা শুধু সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। এর বাইরে আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে কিছু জানি না। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বরিশালের একটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে। যা সত্য নয় এবং ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক। সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়া আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। প্রয়োজনে সকলেই তদন্ত করে দেখতে পারেন। আর আমি যদি গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকি, তাহলে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকবো। কিন্তু তাও আমাকে করা হয়নি।’
মুরাদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে অনেক পরিশ্রম করে একজন শিল্পী একটা পর্যায়ে আসেন। একজন শিল্পী একদিনে শিল্পী হতে পারেন না। তাকে তিলে তিলে ঘাম ঝড়িয়ে একটা পর্যায়ে খুব কষ্ট করতে আসতে হয়।’
‘একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে এ কাজটিকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। নৃত্য সাধারণত মেয়েরা বেশি করে থাকে। আর আমার কাছে শিখতে আসা সকল মেয়েকে সন্তানের চোখে দেখি। আর যদি বদনাম থাকতো, তাহলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের আমাদের কাছে নাচ শেখাতে দিতেন না।’
মুরাদ বলেন, ‘২০০৬ সালে থেকে আমি নৃত্যাঙ্গন নৃত্যকলা একাডেমির পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে সম্মানের সঙ্গে বরিশালে জাতীয় প্রোগ্রাম করে আসছি। আর কার্যক্রমের অনুকূলে আমি নিজেই এ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এখনও আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর জাতীয় পুরস্কার পেয়ে আসছেন। এ পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থী জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন এবং পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।’
সান নিউজ/ এআর