বিনোদন ডেস্ক:
২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হৃদিতা’। কিন্তু তার আগেই দেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় একই উপন্যাস অবলম্বনে ‘ড্রিমগার্ল’ ছবির কাস্টিং, সাইনিং, মহরত ও শুটিং প্রস্তুতির খবর।
অনুদান পাওয়ার খবরটি আনন্দের হলেও, বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উপন্যাসটির লেখক আনিসুল হক এবং ছবিটির প্রযোজক যাদুকাঠি মিডিয়ার কর্ণধার মো. মিজানুর রহমান!
প্রযোজকের অভিযোগ, ছবিটি নির্মাণের জন্য আনিসুল হকের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া থেকে শুরু করে শিল্পীদের সাইনিং, মহরত অনুষ্ঠান আর শুটিংয়ের সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন গত বছরের মার্চ মাস থেকে। অথচ সম্প্রতি ছবিটি অন্য প্রযোজকের নামে অনুদান পায়। যেটি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
মিজানুর রহমানের দাবি, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি এ উপন্যাস থেকে ছবি নির্মাণের জন্য আনিসুল হকের লিখিত অনুমতি নেন তিনি। লেখক উপন্যাসটি নিয়ে ছবি বানানোর জন্য প্রযোজকের অফিসিয়াল প্যাডে লিখিত দেন। সেসময় ছবিটির পরিচালনা করার কথা ছিল যুগল পরিচালক ইস্পাহানী আরিফ জাহানের। আনিসুল হকের লিখিত অনুমতির পর এ উপন্যাস নিয়ে নির্মিতব্য ছবির মহরতও করা হয়। ছবির নাম রাখা হয়েছিল ‘ড্রিমগার্ল’। গত বছর মে মাসে নায়ক হিসেবে রোশন এবং নায়িকা হিসেবে অধরা খানের অভিনয় করার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে গত ২৫ জুন সরকারি অনুদানের গেজেট প্রকাশের পর দেখা যায় আনিসুল হকের ‘হৃদিতা’ উপন্যাস নিয়ে একই নামে ছবি নির্মাণের জন্য অনুদান দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রযোজক হিসেবে এমএন ইস্পাহানী ও পরিচালক হিসেবে ইস্পাহানী আরিফ জাহানের নাম উল্লেখ রয়েছে।
প্রযোজক মিজানুর রহমান বিষয়টিকে জালিয়াতির সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে আনিসুল হক সাহেবের লিখিত অনুমতি আছে। সেখানে কীভাবে অন্য কেউ এ গল্প নিয়ে ছবি নির্মাণের জন্য অনুদান পেতে আবেদন করে? নিশ্চয়ই লেখক অন্য কাউকে তার গল্প নিয়ে ছবি বানানোর অনুমতি দেননি। আমিও সরকারি গেজেটে উল্লিখিত পরিচালক কিংবা প্রযোজককে অনুদানের জন্য জমা দেওয়ার অনুমতি দেইনি। সবচেয়ে বড় কথা এ ছবির মহরতও আমি করে ফেলেছি। নায়ক নায়িকার সাইনিং মানিও দিয়েছি। শুটিং প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আমার অনেক অর্থও ব্যয় হয়েছে। সুতরাং অন্যায়ভাবে জালিয়াতি করে একটি গল্প প্রযোজকের নাম বদলে অনুদানের জন্য জমা দেওয়া আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি আমি অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানাবো। এ নিয়ে আমি আইনি ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে হৃদিতার লেখক আনিসুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একবার একজন প্রযোজককেই অনুমতি দিয়েছি। দ্বিতীয়বার কাউকে অনুমতি দেইনি। শেষ পর্যন্ত যতটুকু জানি, ছবিটি অনুদান পেয়েছে, কিন্তু পরবর্তীতে কে প্রযোজক হচ্ছেন সেটা আমার জানা নেই। বিষয়টি তারা বুঝবেন। আমার কাছে যদি আসে তাহলে আমি যাকে শুরুতে অনুমতি দিয়েছি সেই পাবে। পরবর্তীতে কারা কী করলো সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। যার অফিসিয়াল প্যাডে অনুমতি দিয়েছি সেই প্রযোজক যদি ছবি তৈরির মালিকানা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেন তাহলে সেখানেও আমার কথা এটাই থাকবে, আমি তাকেই অনুমতি দিয়েছি।’
এদিকে এই অভিযোগের বিষয়ে ইস্পাহানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যা করছি অনুমতি নিয়েই করছি। এখানে কোনও জালিয়াতির বিষয় নেই।’
এদিকে অনুদান পাওয়ার পরই ছবিটি থেকে সরে দাঁড়ান এর প্রধান চরিত্র অধরা খান! একই চরিত্রের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন পূজা চেরী।
অধরা খান বলেন, ‘অনেক প্রত্যাশা ছিলো ছবিটি নিয়ে। কিন্তু প্রযোজক-পরিচালকদের মধ্যকার এই জটিলতার মধ্যে নিজেকে জড়াতে চাইনি বলেই সরে দাঁড়ালাম।’