বিনোদন ডেস্ক:
অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তার দেহ নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সের এক জন অ্যাটেনডেন্ট। সোমবার (১০ আগস্ট) একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সুশান্তের দেহ হলুদ হয়ে গিয়েছিল। তার আরও দাবি, সুশান্তের গলার সামনের দিকেই শুধু ফাঁসের দাগ ছিল। কেউ আত্মহত্যা করলে এমনটা হতে পারে না।প্রয়াত অভিনেতার হাঁটু দু’টি মোড়া ছিল এবং সেখানে দাগ ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। তার দাবি, আত্মহত্যার ঘটনায় কোনও ব্যক্তির মুখ থেকে ফেনা বেরিয়ে আসে। কিন্তু সুশান্তের ক্ষেত্রে তিনি এমনটা দেখেননি।
এরই মধ্যে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী আজ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, তাকে ‘রাজনীতির বলির পাঠা’ করার চেষ্টা হচ্ছে। রিয়ার অভিযোগ, সুশান্তের মৃত্যুর পিছনে কোনও চক্রান্তের তথ্য এখনও সামনে না এলেও সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ফেলেছে।
সুশান্তের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের বিষয় নিয়ে আগামীকাল (১২ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে। তার আগে শীর্ষ আদালতের সামনে রিয়ার আর্জি, তদন্তের ভার সিবিআইকে দেওয়ার ব্যাপারে শীর্ষ আদালত যদি সম্মত হয়, তা হলেও পাটনা নয়, তদন্তকে মুম্বাইয়ের আদালতের এক্তিয়ারে রাখা হোক।
সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা সরানোর অভিযোগের ভিত্তিতে রিয়াকে আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সোমবার ভাই শৌভিক ও বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে ইডির দফতরে ঢুকতে দেখা যায় রিয়াকে। সুশান্তের বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদীকেও ডেকে পাঠানো হয়। দুপুরে ইডি দফতরে পৌঁছান সুশান্তের রুমমেট সিদ্ধার্থ পিঠানি। ইডি সূত্রের দাবি, অভিনেত্রীর রোজগার, খরচ ও বিনিয়োগের ভিতরে অসঙ্গতি নিয়ে জবাব চাইছেন তদন্তকারীরা।
এ দিকে, রিয়ার হলফনামায় বলা হয়েছে, সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনা যেহেতু মুম্বাইয়ে ঘটেছে, তাই সিবিআই তদন্তের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের আর্জি আইনসঙ্গত নয়। কারণ, যেখানে অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কিংবা আদালত চাইলেই সিবিআই তদন্ত হতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনওটাই ঘটেনি। মহারাষ্ট্র সরকারও সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করছে বলে জানানো হয়েছে।
রিয়ার দাবি, সুশান্তের দুঃখজনক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিহার ভোটের আগে বিরাট ভাবে হইচই শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, পাটনায় তার বিরুদ্ধে এফআইআরের পিছনেও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের হাত রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল চলছে বলে অভিযোগ এনে হলফনামায় টুজি কেলেঙ্কারি ও আরুষি হত্যার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন রিয়া। সুশান্তের মৃত্যু-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। দলের মুখপত্রে তিনি লিখেছিলেন, বাবার দ্বিতীয় বিয়ের কারণে সুশান্ত মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে অভিনেতার ভাল সম্পর্ক ছিল না। এর পরেই সুশান্তের আত্মীয় ও বিহারের বিজেপি বিধায়ক নীরজকুমার সিং বলেছেন, রাউত ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে।