সান নিউজ ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় জুটি রিয়াজ-শাবনূর। দুজনের কেউই অভিনয়ে এখন আর নিয়মিত না হলেও, তাদের মধ্যেকার বন্ধুত্ব আজও অটুট রয়েছে। শাবনূর বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।
আরও পড়ুন: মাহিয়া মাহির জন্মদিন
বুধবার (২৬ অক্টোবর) রিয়াজের ৫০তম জন্মদিন ছিল। বিশেষ এই দিনে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে শাবনূর লিখেছেন, “শুভ জন্মদিন রিয়াজ। তোমার কি মনে আছে, চলচ্চিত্রে প্রথম তুমি যখন এসেছিলে তখন আমি তোমার নাম দিয়েছিলাম রাঙা মুলো। কারণ তুমি ভীষণ কিউট ছিলে! তুমি আমার কাছে এমন রাঙা মুলো হয়েই থাকবে আজীবন! অসংখ্য রোমান্টিক ছবি করেছি দুজন একসাথে। আমাদের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে!”
অনেক স্মৃতি থেকে একটা ঘটনা উল্লেখ করে শাবনূর লিখেন, বিয়ের ফুল ছবির ‘মন না দিলে হয় কি প্রেম তাই' গানের শুটিং করছিলাম কক্সবাজার এক হোটেলের সামনে! আমার পায়ের কাছেই ছিল একটি বিষধর সাপ যা আমি খেয়াল করিনি আর তুমিও বলোনি কারণ আমি সাপ ভীষণ ভয় পেতাম! তুমি সাপটিকে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরেই শটটি সম্পূর্ণ করেছিলে আর পুরো ঘটনাটাই ছিল আমার অজানা! শট দেওয়ার পর আমি তা জানার সাথে সাথেই ভয়ে দিয়েছিলাম এক দৌড়। এমন আরো অনেক মজার স্মৃতি তোমার সাথে রয়েছে!
আরও পড়ুন: নির্মাতারা আমার ফিটনেস পছন্দ করে
লেখার শেষে জন্মদিনে রিয়াজকে অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা জানান শাবনূর। বলেন, ‘ভালো থাকো সবসময়।’
প্রসঙ্গত, শাবনূর বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ৯০ দশক থেকে এ পর্যন্ত আসা চিত্র তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্র তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম পরিচালিত চাঁদনী রাতে সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন শাবনূরের।
প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও পরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের সাথে জুটি গড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। একে একে এ জুটি সুপারহিট ছবি দিতে থাকেন। সালমানের অকাল মৃত্যুতে সাময়িক ভাবে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়লেও তার চিরায়ত বাঙালি প্রেমিকার ইমেজ এবং অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা তাকে দর্শকদের হৃদয়ে শক্ত আসন গড়তে সাহায্য করে। পরে রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস আহমেদ ও শাকিব খান সাথে জনপ্রিয় জুটি গড়ে বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবি উপহার দেন।
আরও পড়ুন: আমি তো তার মুখ বন্ধ রাখতে বলিনি
শাবনূর ২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছবিতে অভিনয় করে তার ক্যারিয়ারের একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে রেকর্ড পরিমান ১০ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।এছাড়াও ৩ বার তিনি বাচসাস পুরষ্কার লাভ করেন।
অপর দিকে, রিয়াজকে প্রণয়, মারপিট ও নাট্যসহ বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। তিনি অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং সাতবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।
তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলার নায়ক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে কয়েকটি চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর ১৯৯৭ সালে মহাম্মদ হান্নান পরিচালিত প্রাণের চেয়ে প্রিয় চলচ্চিত্রে প্রধান অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে ব্যবসায়িক সফলতা লাভ করেন এবং একইসঙ্গে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশের অনেক প্রখ্যাত পরিচালকের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদের দুই দুয়ারী (২০০০) চলচ্চিত্রে রহস্য মানব চরিত্রে ও তৌকির আহমেদের দারুচিনি দ্বীপ (২০০৭) চলচ্চিত্রে শুভ্র চরিত্রে এবং কি যাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত সাম্প্রতিকতম চলচ্চিত্রগুলো হল সুইটহার্ট ও কৃষ্ণপক্ষ (২০১৬)। বর্তমানে তিনি ২০২০ সালে মুক্তি প্রতীক্ষিত সুন্দরবনে র্যাবের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে নির্মিতব্য অপারেশন সুন্দরবন চলচ্চিত্রে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: বলিউড তারকারা সাবান-তেল বিক্রেতা!
নানা মাধ্যম ও কাজে সক্রিয় অভিনেতা রিয়াজ চ্যানেল আইয়ের হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় মৌসুমে প্রধান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সুত্র: উইকিপিডিয়া
সান নিউজ/এনকে