নিজস্ব প্রতিবেদক:
শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের উৎসবের স্লোগান ‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’।
শুক্রবার ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৩৯ দেশের ১৭৯টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হবে সেখানে। রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে ছবিগুলো দেখার সুযোগ মিলবে। শিশু-কিশোরসহ তাদের অভিভাবকেরা বিনা দর্শনীতে উপভোগ করবেন এ উৎসব। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় ১৩তম আসরটির আয়োজক চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ।
শুক্রবার বিকেলে শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে এ উৎসবের উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার।
এর আগে সোমবার দুপুরে রাজধানীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুনিরা মোরশেদ মুন্নী, উৎসব উপদেষ্টা মোরশেদুল ইসলাম ও ইয়াসমিন হক। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎসব পরিচালক ফারিহা যাহিন।
সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে জানানো হয়, ঢাকায় মূল উৎসবকেন্দ্র হবে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন। এ ছাড়া জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ সেন্টার ও গ্যেটে ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি কর্মশালা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন বেলা ১১টা, ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মোট ৪টি প্রদর্শনী হবে। একটি প্রদর্শনীতে একাধিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। অভিভাবকসহ শিশু-কিশোরদের জন্য সব প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। উৎসবে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে তিনটি দ্বিতল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মোট চার ধরনের কর্মশালা অনুষ্টিত হবে এবারের উৎসবে। এর মধ্যে সিনেমাটোগ্রাফির ওপর নিহাল কুরাইশি, ডিরেকশনের ওপর পিপলু আর খান, ‘সাউন্ড ইন ফিল্ম’-এর ওপর নাহিদ মাসুদ এবং ‘স্টোরি টেলিং’বিষয়ক কর্মশালা পরিচালনা করবেন অমিতাভ রেজা। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডায় উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা ও রণাঙ্গনের আলোকচিত্রী হারুন হাবীব ও প্রথম বাংলাদেশি নারী ফিফা রেফারি জয়া চাকমা।
শিশুদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে মেলায় থাকবে বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে জমা পড়া ৪৮টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নির্বাচিত ১৮টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এবং ৫টি চলচ্চিত্র মনোনয়ন পাবে পুরস্কারের জন্য। পুরস্কার হিসেবে থাকছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও আর্থিক প্রণোদনা। পুরস্কারের জন্য গঠিত ৫ সদস্যের জুরিবোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। অর্থাৎ ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো বাছাই করবে ছোটরাই। ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে ‘ইয়ং বাংলাদেশি ট্যালেন্ট’ বিভাগ। এ ছাড়া মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রয়েছে ‘স্পেশাল ফিল্ম কমপিটিশন’ বিভাগ, যেখানে বিষয় হলো ‘প্রজন্মের চোখে বঙ্গবন্ধু’। একই সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে উৎসব কমিটি মনোনীত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের ১০৫ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।