বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ রোববার (১৭ এপ্রিল)। গত বছরের এই দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঢাকাই সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত এই অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন: আলিয়া-রণবীরের মেহেদির ছবি ফাঁস
কবরী অভিনীত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ও ‘সাত ভাই চম্পা’ চলচ্চিত্র দুটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সেরা ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র তালিকায় যথাক্রমে প্রথম ও দশম স্থান লাভ করে। ‘সারেং বৌ’-এর নবিতুন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার পান কবরী। এ ছাড়া ‘সুজন সখী’ ও ‘দুই জীবন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আরও দুটি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
কবরী ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রথম মঞ্চে উঠেছিলেন কবরী। তারপর টেলিভিশন থেকে সিনেমায় কাজ করেন। বিংশ শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনায়িকাদের একজন ছিলেন কবরী।
আরও পড়ুন: মায়ের নামে মসজিদ বানালেন রোজিনা
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন কবরী। এরপর কাজ করেন ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর মতো দর্শকপ্রিয় অসংখ্য সিনেমাতে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান তিনি। সেখান থেকে পাড়ি জমান ভারতে। কলকাতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন কবরী।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক হত্যা: প্রধান আসামি রাজু নিহত
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন কবরী। শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। নায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে ‘রংবাজ’ চলচ্চিত্র পায় বেশ জনপ্রিয়তা।
৫০ বছরের বেশি সময় চলচ্চিত্রে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। ঢাকার চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী। কবরী শেষ জীবনে একাধারে ছিলেন, চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: শাহবাজ মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছে না পিপিপি
২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’ প্রকাশ পায়।
ব্যক্তিগত জীবনে কবরী প্রথমে বিয়ে করেছিলেন চিত্ত চৌধুরীকে। তার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি ঘর বেঁধেছিলেন সফিউদ্দীন সরোয়ারের সঙ্গে। এই সংসারও ২০০৮ সালে ভেঙে যায়। তিনি পাঁচ সন্তান রেখে গেছেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ