বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নাটকীয়ভাবে জয়ী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার বলেছেন, জায়েদ খান মামলা করতে চাইলে করুক। মামলা করার অধিকার দেশের প্রতিটা নাগরিকের আছে। সে মামলা করলে আমরা লড়ার জন্য প্রস্তুত আছি। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি জয়ী ভালো লাগার আনন্দের। আর সংগ্রাম করে জয়ী হওয়ার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ আছে। এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুন পরিষদ নেতৃত্বে আসুক সেটা পুরো দেশবাসীই চেয়েছেন। তাদের দোয়া ও প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। শিল্পী ও সত্যের জয় হয়েছে। শিল্পীদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। তারা আমার পাশে আছেন, থাকবেন।
বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নিপুণ বলেন, সত্যের জয় বলেছি বেশ কয়েকটি কারণে। যে অভিযোগের কারণে তার (জায়েদ খান) প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, সেই অভিযোগ সংক্রান্ত অনেক ফুটেজ আছে। আপিল বোর্ড সেগুলো যাচাই-বাছাই করার পর অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে বলেই তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির অফিসে আপিল বোর্ডের জরুরি বৈঠক শেষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ হারান অভিনেতা জায়েদ খান। এইসাথে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্পী সমিতির ৩৮ বছরে প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক হলেন নিপুণ। এ সময় জায়েদ খানের প্যানেল থেকে নির্বাচিত সদস্য চুন্নুর পদ বাতিল করেছে আপিল বোর্ড। বৈঠকে হাজির হননি অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নু। এই বৈঠকে উপস্থিত না থাকার কথা তিনি আগেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, নির্বাচন কমিশনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানসহ চারজনকে আইনি নোটিশও দিয়েছেন জায়েদ খান।
এর আগে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আক্তার। তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি না মানার অভিযোগ এনেছেন ইসি পদে নির্বাচিত চুন্নুর বিরুদ্ধেও। অভিযোগ আমলে নিয়ে শিল্পী সমিতির নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও সচিব বরাবর দিক নির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর আপিল বোর্ডকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: মিশা ভাইকে ভীষণ মিস করছি
নির্দেশনা অনুযায়ী আপিল বোর্ড সংশ্লিষ্টরা আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসে জরুরি এক বৈঠক ডাকা হয়। এতে উপস্থিত থাকতে বলে আপিল বোর্ড চিঠি দেয় অভিযোগকারী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নুসহ দুই নির্বাচন কমিশনার জাহিদ হোসেন, বি এইচ নিশান, শিল্পী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে। কিন্তু ৪টায় শিল্পি সমিতির অফিসে তালা ঝুলতে দেখা যায়। পরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির অফিসে আপিল বোর্ডের সভা হয়।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিএফডিসিতে শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০২২-২৪) মেয়াদের নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন ভোট পেয়েছেন ১৯১টি। অপরদিকে তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর পেয়েছেন ১৪৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খান পেয়েছেন ১৭৬ ভোট। তার বিপরীতে নিপুণ পেয়েছেন ১৬৩ ভোট।
আরও পড়ুন: আবারও উত্তপ্ত এফডিসি
এছাড়া সহ-সভাপতি- ডিপজল (২১৯) ও রুবেল (১৯১), সহ-সাধারণ সম্পাদক- সাইমন সাদিক (২১২), সাংগঠনিক সম্পাদক- শাহানূর (১৮৪), আন্তর্জাতিক সম্পাদক- জয় চৌধুরী (২০৫), দফতর ও প্রচার সম্পাদক- আরমান (২৩২), সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক- ইমন (২০৩), কোষাধ্যক্ষ- আজাদ খান (১৯৩), কার্যকরী পরিষদ পদে রোজিনা (১৮৫), মৌসুমী (২২৫), কেয়া (২১২), জেসমিন (২০৮), অঞ্জনা (২২৫), অমিত হাসান (২২৭), চুন্নু (২২০), আলিরাজ (২০৩), সুচরিতা (২০১), ফেরদৌস (২৪০) ও অরুণা বিশ্বাস (১৯২)।
নির্বাচনে কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন পীরজাদা হারুন। এবার সমিতির ভোটার সংখ্যা ছিল ৪২৮ জন। ভোট দিয়েছেন ৩৬৫ জন। বাতিল ১০ ভোট। ৩৫৫টি ভোট বৈধ।
সান নিউজ/এমকেএইচ