বিনোদন ডেস্ক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলার আসামি প্রসঙ্গে শবনম ফারিয়া বলেছেন, আমি ইভ্যালিতে যুক্ত হয়েছি গত ৫ জুন। যিনি মামলা করেছেন, তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি পণ্য কিনেছেন মে মাসের শুরুতে। তিনি কি আমাকে স্বপ্নে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্ডার দিয়ে দিয়েছেন? তার যে অভিযোগ, সেটাই তো ভিত্তিহীন। কারণ, আমি তখন ওখানে কাজই করতাম না। তিনি আমাকে দেখে কোনোভাবেই উদ্বুদ্ধ হয়ে আসতে পারেন না।
সম্প্রতি গণমাধ্যম ইভ্যালি ইস্যুতে মামলার প্রেক্ষিতে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে এসব কথা বলেন তিনি। শবনম ফারিয়া আরও বলেন, আমি ইভ্যালিতে যোগ দেওয়ার পরও কোনোভাবে প্রকাশ্যে এই কোম্পানিকে প্রোমোট করিনি। আমি যুক্ত হওয়ার সময়ই বলেছিলাম, তাদের পণ্য প্রোমোট করতে পারব না। কারণ, পণ্যের প্রোমোশন করে আমি অনেক টাকা পাই। যেমন ইভ্যালি প্রোমোশন করার কথা তাহসান ভাই ও মিথিলা আপুর—তারা এসবের জন্য টাকা পান।
তিনি আরও বলেন, আমাকে এসব পণ্যের প্রোমোশন করার জন্য টাকা না দিলে কেন করব? তখন তারা আমার শর্তে রাজি হয়। তাই আমি জয়েন করার পরও কিছুই করিনি। আমি ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যখন যমুনা ব্যাংক এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল। পোস্টটা শুধু আমি একা নই, বাংলাদেশের মনে হয় আট কোটি মানুষ শেয়ার করেছিল সেদিন।
শবনম ফারিয়া বলেন, পুরো দেশের মানুষ ইভ্যালিকে বিশ্বাস করে যেমন পণ্য অর্ডার করেছে, আমিও তেমনই গেলাম। আমি তো অন্য দেশের বা অন্য গ্রহের মানুষ নই। তবে এটাও ঠিক, আমি প্রকাশ্যে ইভ্যালিকে কখনোই প্রোমোট করিনি। আমি কিন্তু ইভ্যালি থেকে এক পয়সাও বেতন পাইনি। আমি যোগ দেওয়ার পরই তাদের টাকাপয়সা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়ে গেল। ওরা আমাকেও টাকা দিতে পারেনি। তাই আমি চাকরিও ছেড়ে দিই। অনেকে জানতে চেয়েছিল, চাকরি ছেড়েছি কী কারণে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে শুধুই হেনস্তা করা হচ্ছে, এর বাইরে আর কিছুই নয়। শুধু যে সামাজিকভাবে হেনস্তা হচ্ছি, তা তো নয়, আমি পারিবারিকভাবেও তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বাসার একটা মেয়েকে নিয়ে মামলা হয়েছে, বোঝেন সবার কী অবস্থা হবে! আমার একটা প্রশ্নও আছে। এই মামলা নাকি হয়েছে ৩ অথবা ৪ ডিসেম্বরে। এত দিন তাহলে কেন এটা প্রকাশ্যে এল না? হঠাৎ করে আজ (শুক্রবার) কেন খবরটা প্রকাশ্যে আনা হলো? আরেকটা কথা, আমার কাছে কিন্তু অফিশিয়ালি কেউ কোনো মামলার বিষয় জানায়নি। আমি কিন্তু নিউজ দেখে জানতে পেরেছি।
শবনম ফারিয়া বলেন, মামলার খবরে আমার মা তো হঠাৎ করেই নার্ভাস হয়ে গেছেন। কী, কেস হইছে মানে কী! আমরা তো কেস, মামলা এসব শব্দের সঙ্গে পরিচিত নই। আমরা তো গতানুগতিক মধ্যবিত্ত পরিবার। কেস, মামলা মানে তো বিশাল ব্যাপার। তাই সবাই খুব চিন্তিত। এটা অনেক সিরিয়াস একটা ব্যাপার। হালকা কিছু হলে আমিই সামলাতে পারতাম। যখন এটা গুরুতর বিষয়, তখন এটা আমার মা ও পরিবারের অন্যরা মিলে ভাবছেন। তাঁরা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই-ই হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় বাংলাদেশের অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিভিন্ন পদে দায়িত্বে থেকে তাদের কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সাদ স্যাম রহমান নামে এক গ্রাহক। তাদের উপস্থিতি এবং তাদের বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তার কারণে আস্থা রেখে ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করেছেন বলে জানান সাদ স্যাম রহমান।
সান নিউজ/এমকেএইচ