বিনোদন ডেস্ক: বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ানের মাদক কাণ্ডে তুলপাড় ভারত। এই ঘটনাটিতে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এতে অনেকেই শাহরুখপুত্রকে দুষলেও অনেকেই বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরে প্রায় ৩০০০ কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধারের মামলার দিক ঘুরিয়ে দিতে এ কাণ্ডের দিকে গেছে এনসিবি।
আরিয়ান আটকের পর থেকেই বেশ অস্থিরতায় আছেন শাহরুখ ও গৌরী খান। শাহরুখ নিজেই নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) হেফাজতে থাকা অবস্থায় ছেলের খবরাখবর রাখছেন। এমনকি তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন নিজের শুটিংও।
আরিয়ানের জামিন শুনানি হবে শুক্রবার (৮ অক্টোবর)। শোনা যাচ্ছে, ছেলের জামিন শুনানির পরই শুটিংয়ে ফেরার সিদ্ধান্ত নিবেন শাহরুখ খান।
এদিকে আগামী বছরই মুক্তি পাওয়ার কথা শাহরুখের নতুন সিনেমা 'পাঠান' ও দক্ষিণী পরিচালক অ্যাটলির নতুন সিনেমা। ইতোমধ্যেই মুম্বাইতে সম্পন্ন হয়েছে ‘পাঠান’-এর প্রথম পর্বের শুটিং। ১০ অক্টোবর থেকে স্পেনে শুরু হওয়ার কথা ছিলো সিনেমাটির দ্বিতীয় পর্বের শুটিং। শাহরুখ খানের বিপরীতে এই সিনেমায় অভিনয় করছেন দীপিকা পাড়ুকোন। কিন্তু শাহরুখপুত্র আরিয়ান খানের আটকের ঘটনায় সেই শুটিং স্থগিত করেছে সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা যশরাজ।
সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরে প্রায় ৩০০০ কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধারের মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে এনআইএ। গুঞ্জন উঠেছে, মুন্দ্রা বন্দরের ওই হেরোইন উদ্ধারের ঘটনা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতেই প্রমোদতরীতে অভিযান চালিয়েছে এনসিবি।
এই দাবি তুলতে দেখা গেছে কংগ্রেসকেও। অভিযোগের পাল্লা ভারী ছিলো বিজেপির দিকেই। বৃহস্পতিবার এনসিপি’র মুখপাত্র ও মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক বলেছেন, ‘পুরো ঘটনাটা সাজানো। বলিউডকে কালিমালিপ্ত করতে এবং মহারাষ্ট্রের বিরোধী সরকারকে প্যাঁচে ফেলতে বিজেপি এনসিবি-কে দিয়ে এসব করাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শাহরুখ খানকে পরবর্তী নিশানা করা হবে বলে অন্তত এক মাস আগে সাংবাদিকদের কাছে খবর ছিলো।’
এ ছাড়া মন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন গণমাধ্যমে আরিয়ানের সঙ্গে ভাইরাল হওয়া এক ব্যক্তির পরিচয় নিয়েও। প্রমোদতরীতে অভিযানের সময় এনসিবি’র যে দলটি গিয়েছিলো, সেই দলে মণীশ ভানুশালী নামে এক ব্যক্তিও ছিলেন। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, ওই ব্যক্তি তাদের দপ্তরের কেউ না বলে জানিয়েছে এনসিবি।
মন্ত্রী নবাব মালিকের দাবি, বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যক্তি। অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও ছবি রয়েছে তার। তবে গণমাধ্যমের কাছে মণীশ জানান, নবাবের অভিযোগ সত্য নয়। বিজেপির সঙ্গে ওই ঘটনার কোনো যোগসূত্র নেই।
এদিকে অভিযানে দেখতে পাওয়া আরেক ব্যক্তির পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আরিয়ানকে আটকের পর তার সঙ্গে সেলফি তুলেছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই ছবি টুইটারে পোস্ট করে এক আইনজীবী লিখেছেন, তার নাম এসকে গোভাসাই। পেশায় তিনি একজন ‘প্রাইভেট ডিটেকটিভ’। এতে প্রশ্ন উঠেছে এনসিবির সঙ্গে যুক্ত না থেকেও কীভাবে তারা ওই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন!
যদিও এ ব্যাপারে এনসিবি আগেই জানিয়েছে। শুধু প্রমোদতরীর ওই মাদক পার্টির আগাম তথ্যই তাদের কাছে ছিলো। সেখানে আরিয়ান খানের থাকার ব্যাপারে তারা কিছুই জানতেন না।
বর্তমানে আরিয়ান বর্তমানে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) হেফাজতে আছেন। তার সঙ্গে আছেন মডেল মুনমুন ধামেচা, আরবাজ শেঠসহ বাকিরা। এনসিবি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানায়, স্যানিটারি ন্যাপকিন, অন্তর্বাসে মাদক লুকিয়ে রেখেছিলেন মুনমুন।
অন্যদিকে এক সাক্ষাৎকারে মুনমুনের আইনজীবী ভিন্ন দাবি করে বলছেন, টাকার বিনিময়ে ওই পার্টিতে নেওয়া হয়েছিলো মুনমুনকে। আরিয়ান-আরবাজের মতো মুনমুনও গোয়াগামী প্রমোদতরীতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তারও টিকিট ছিলো না। বলরাম নামের এক ব্যক্তি মুনমুনের টিকিট করেছিলেন।
আইনজীবী আলি কাসিব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মুনমুন পেশায় মডেল। পার্টি নজরকাড়া করে তুলতেই তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। বিনিময়ে তাকে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে বলা হয়েছিলো।’
সূত্র: আনন্দবাজার।
সান নিউজ/এফএআর