বিনোদন ডেস্ক: বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (রোববার)। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী।
অসংখ্য গণজাগরণের গানের রচয়িতা বাউল শাহ্ আব্দুল করিম অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। গানে-গানে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় লড়াই করেছেন ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে। এ জন্য মৌলবাদীদের দ্বারা নানা লাঞ্ছনারও শিকার হয়েছিলেন তিনি। স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা নানা আন্দোলন সংগ্রামে গণ-মানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। ভাষার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে পথে পথে গান গেয়ে গণজাগরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক।
এবার শাহ্ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকীতে গানের আসর বসবে উজানধলে। নানা অনুষ্ঠানে চলছে শাহ্ আব্দুল করিমের গান ও তাকে নিয়ে আলোচনা।
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে/আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না/আমি কূলহারা কলঙ্কিনী/কেমনে ভুলিব আমি বাঁচি না তারে ছাড়া, আমি তোমার কলের গাড়ি/সখী কুঞ্জ সাজাও গো/জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে মানুষ হয়ে তালাশ করলে/ আমি বাংলা মায়ের ছেলেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা শাহ্ আব্দুল করিম না থাকলেও গানে আর সুরে কখনো আনন্দ দেবে, কখনোবা গণজাগরণকে শাণিত করবে। আব্দুল করিমকে যেন শুদ্ধভাবে চর্চা করা হয় সে দাবি সংস্কৃতিকর্মীদের।
সংস্কৃতিকর্মী দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী বলেন, বাউল আব্দুল করিমকে আমরা চর্চা করি। তার সৃষ্টি সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে রয়েছে। তবে সম্প্রতি দেখেছি এই মরমি শিল্পীর গান বিকৃত করে গাওয়া হয়। যা আমাদের কষ্ট দেয়। আমরা চাই আব্দুল করিমের গান সঠিক ও শুদ্ধভাবে চর্চা করা হোক।
অ্যাডভোকেট খলিল রহমান বলেন, বাউল আব্দুল করিমের গানের মধ্যে আমরা মানবিকতা খুঁজে পাই। তিনি যেমন গানে গানে বন্ধুর বন্ধনা করেছেন তেমনি মানবমুক্তির জন্য সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন গানের মাধ্যমে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আব্দুল করিমকে আমাদের বেশি বেশি চর্চা করতে হবে। তার গানের সাম্য, মানবিকতা ধারণ করলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যাবে।
সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল আবেদীন বলেন, আব্দুল করিমের স্মৃতি রক্ষাতে প্রস্তাবিত শাহ্ আব্দুল করিম কমপ্লেক্সের প্রাথমিক কাজ চলছে। শিগগির এর অবকাঠামোর কাজও শুরু হবে।
সান নিউজ/এনকে