বিনোদন ডেস্ক : চিত্রনায়িকা পরীমনি এখন কারাগারে। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) তৃতীয় ধাপে আদালতে তোলা হয় তাকে। এদিন জামিনের আবেদন করা হলেও সেটা নামঞ্জুর করেন আদালত। তাই কারাগারেই থাকতে হচ্ছে নায়িকাকে।
গ্রেফতারের পর পরীমনিরকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সিনেমার শিল্পীদের সংগঠন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিও পরীমণির সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করে। মামলার সুরাহা হওয়ার আগেই চলচ্চিত্র শিল্পীদের সংগঠন পরীমণির সদস্য পদ স্থগিত করায় প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
ধীরে ধীরে পরীর জন্য কথা বলছেন অনেকে। চাচ্ছেন ন্যায় বিচার। ‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ লেখা পোস্টার ফেসবুকে শেয়ার করে প্রতিবাদ করছেন অনেকেই। এবার পরীমণির মুক্তি চাইলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর।
শনিবার (১৪ আগস্ট) সকালে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পরীর মুক্তি দাবি করেন তিনি। তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন ফোর্বসের বিশ্লেষণে মেয়েটা ছিলো শোবিজে একজন প্রভাবশালী নারী। বাংলাদেশের ফেসবুক জগতে তার ছিলো সর্বোচ্চ কোটি ফলোয়ার। এ নিয়ে মিডিয়াসহ দেশের মানুষের গর্বের শেষ ছিলো না। মা আগুনে পুড়ে মরেছেন দুই মাস কষ্ট পেয়ে। ব্যবসায়িক কারণে মেয়েটার বাবাও খুন হয়েছেন। সাপলুডুর সাপগুলো পুষে মইগুলো বেয়ে বেয়ে মেয়েটা হয়তো একটা জায়গায় পৌঁছেছে। মফস্বলের একটা মেয়ে এত উঁচুতে পৌঁছানোর পেছনে অবশ্যই যোগ্যতা ছিলো, রহস্যের তো শেষ নেই।
রঙিন দুনিয়ায় সব মেয়েরা খারাপ, আর পুরুষরা মহান। তারকাদের প্রতি সাধারণ মানুষের দেওয়া সম্মানকে ব্যাকফুটে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোর একটা গায়েবি অভিশাপ। মেয়েটা দেশের সবচেয়ে বড় আলোচিত ক্রিমিনাল হয়ে গেলো হঠাৎ করেই?
সারাদেশের গলিতে গলিতে এরকম মজায় মত্ত থাকি আমরা ভোগী পুরুষরা। দোষ হয় শুধু মেয়েদের, সমস্ত অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু তারাই। মেয়েটা এতটা পথ কাদের শেল্টারে এসেছে এই রহস্য উন্মোচিত হবে না কখনও। মেয়েটা অবশ্যই ভালো অভিনেত্রী, মেয়েটা দেশকে আরও সার্ভিস দিতে পারতো। দেশ নেয়নি, হয়তো সে মুক্তি পেয়ে আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে যাবে। নাচতে নেমে ঘোমটা দেওয়ার পুরনো কথাটা মনে পড়ে গেলো। আবার লোকাল ভাষায়- ঘোমটার নিচে পোংটা নাচে, এই বাক্যটাও সামনে চলে এলো।
বেশি লেখার সাহস আমার নাই। আমি নিজেও প্রতিদিন যেকোনো সরকারি বাহিনীর রেইডের অপেক্ষায় থাকি। আকাশের যত তারা, …. ততো ধারা ফর্মুলাটা খুব মানি। সাত সাগর তেরো নদী পার হয়ে এত মদ আর মাদক দেশে আসে কীভাবে? এর কোনো যুক্তিযুক্ত উত্তর কী রাষ্ট্রের কাছে পাবো? ধরা পড়ে যায় নাদান বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কেউ কেউ। অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা অপরাধ। হরহামেশাই মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রায়ালের শিকার হতে হয় শোবিজের মানুষদের। একটা রমরমা রসাত্মক গল্প কয়দিন চলে। দেশে আসলে এসব ছাড়াও কোটি সমস্যা আছে। চার ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে গ্রেফতার হওয়া মেয়েটার কপাল ভালো হাতকড়া পরতে হয়নি, আমি এই দেশে জাতীয় পুরস্কারের সঙ্গে হাতকড়াও উপহার পেয়েছি। একটাই আফসোস- মেয়েটা যে পরিমাণ সিকিউরিটি পেয়েছে সেটা আমি পাইনি। আজ ভদ্রলোকেরা আমাকে কমেন্ট বক্সে প্রচুর গালি দিন প্লিজ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দাবি জানাই- পরীমনির মুক্তি চাই। প্রয়োজনে তাকে রিহ্যাব করানো হোক। সে ভয়ঙ্কর অপরাধী নয়, অভিভাবকহীনতার শিকার একটা লক্ষ্যহীন নৌকা মাত্র। তার কোটি ফলোয়ার আজ হয়ে গেছে দ্বিগুণ হেটার্স। ফলোয়াররা যে বিপদের কারণ হতে পারে- এটা বুঝতে হবে শোবিজের মানুষদের। আজব দেশের সব আজব নাগরিকদের সালাম জানাই। ভালোবাসা অবিরাম।
সান নিউজ/ এমএইচআর