বিনোদন ডেস্ক:
করোনার সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যেও শুটিং বন্ধ রাখার পুরনো সিদ্ধান্তে শিথিলতা এনেছেন টিভি সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতারা। আগামী ১৭ মে থেকে যে কেউ চাইলে শুটিংয়ে অংশ নিতে পারবেন। তবে দেওয়া হয়েছে ছয়টি শর্ত।
শুক্রবার (১৫ মে) দিবাগত রাতে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয় শিল্পী সংঘসহ সংশ্লিষ্ট আরও সংগঠনের নেতাদের যৌথ সিদ্ধান্তে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বৈঠক শেষে ১৫ মার্চ দিবাগত রাত ১২টার দিকে শুটিংয়ে শিথিলতা আনার কারণ জানায় ডিরেক্টরস গিল্ড।
গিল্ডের সভাপতি অভিনেতা-নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু জানান, করোনা পরিস্থিতি বর্তমান সময়ে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে আন্তঃসংগঠনসমূহ এই সময়ে শুটিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও, সেটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, সরকার সাময়িকভাবে লকডাউন শিথিল করেছে। ফলে কিছু সংখ্যক শিল্পী কলাকুশলী প্রযোজক নাটক নির্মাণ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে সংশ্লিষ্ট সংগঠনে অনুরোধ করেন।
তারই প্রেক্ষিতে ১৭ মে থেকে সংশ্লিষ্ট শুটিং ইউনিট সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে সরকার এবং আন্তঃসংগঠনের নিয়মকানুন মেনে শুটিং শুরু করার ব্যাপারে সাময়িক শিথিলতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গিল্ডের সূত্রে জানা গেছে, কেউ শুটিংয়ে অংশ নিতে চাইলে ছয়টি শর্ত পালন করতে হবে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। আন্তঃসংগঠনের পক্ষ থেকে করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইডলাইন অনুসরণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। শুটিং বিষয়ক স্বাস্থ্যবিধির তথ্যাবলি স্ব স্ব সংগঠন থেকে সংগ্রহ করে সেই নিয়মে শুটিং করতে হবে।
২। লকডাউনের সময় সরকারি সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করে শুটিং করতে হবে।
শিল্পী, কলাকুশলীরা শুটিং সংশ্লিষ্ট যে কোনও ধরনের কাজ নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করবেন। এর সাথে আন্তঃসংগঠন বা স্ব স্ব সংগঠন কোনোভাবেই সম্পৃক্ত থাকবে না।
৩। শুটিং করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে, অথবা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আন্তঃসংগঠন বা স্ব স্ব সংগঠন কোনও দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করবেন না। সম্পূর্ণ দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয়শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, রূপসজ্জাশিল্পীসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিটের সবার।
৪। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এবং আন্তঃসংগঠনের সিদ্ধান্ত ভালোভাবে অবগত হয়ে যারা শুটিং করতে আগ্রহী সেই শিল্পী, কলাকুশলী, প্রযোজক স্ব স্ব সংগঠনের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক বরাবর এই মর্মে ক্ষুদে-বার্তা অথবা ইমেইল পাঠাবেন। যেখানে লিখতে হবে, ‘আমি দুর্যোগকালীন সময়ে আন্তঃসংগঠনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হয়ে নিজ দায়িত্বে স্বেচ্ছায় শুটিংয়ে অংশগ্রহণ করছি। আমি সংকটে নিপতিত হলে এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে আমার।’
৫। সরকার পরিস্থিতি বিবেচনায় যে ঘোষণা দেবেন সকলকে সেটা মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। অথবা কাজ বন্ধ রাখার পরিস্থিতি উদ্ভব হলে তা বন্ধ করতে হবে।
৬। আন্তঃসংগঠন এই শিথিল সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় যে কোনও সময় বাতিল করতে পারে।
আন্তঃসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ ভাষ্যে, ‘সকলের কাজ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি আমরা। পাশাপাশি এও মনে করি সবকিছুর ঊর্ধ্বে জীবন। এই মহা-মূল্যবান জীবনের কাছে সব কিছুই তুচ্ছ। আর তাই বর্তমান সময়ে যেখানে আমরা সঙ্গ নিরোধ অবস্থায় আছি সেখানে অধিক লোকসমাগম স্থানে যাতায়াত কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। সেই জন্য আমরা একের অধিক লোক সমাগম ঘটে এমন কাজকে আপাতত নিরুৎসাহিত করছি। নিরাপদ থাকুন। বাসায় থাকুন। জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।’
প্রসঙ্গত, করোনা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে গত মার্চ মাস থেকে দেশের সব রকমের শুটিং বন্ধ রয়েছে। যদিও সম্প্রতি গোপনে শুটিং করতে গিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম, জাহিদ হাসান, পরিচালক আদিবাসী মিজানসহ অনেকেই।
সান নিউজ/ আরএইচ