বিনোদন প্রতিবেদক : ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বুধবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা বনানীর ১৯/এ রোডের ১২ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, অভিযান চলাকালে পরীমনির বাসায় প্রবেশ করে র্যাবের কয়েকজন নারী সদস্য। সেখানে গিয়ে বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ করে তারা। ওই র্যাব সদস্যরা বাসায় ঢোকার পর থেকেই পরীমনিকে আটক করার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলছে না বাহিনীর সদস্যরা।
পরীমনির বাসার মূল ফটকের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা র্যাব-১ এর কর্মকর্তা মুজিবুর সাংবাদিকদের বলেন, র্যাব সদর দফতরের একটি গোয়েন্দা টিম মূলত অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা সদর দফতরের টিমকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ঘটনাস্থলে এসেছি। মূলত অভিযানস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছি আমরা। তবে কী কারণে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং তাকে গ্রেফতার করা হবে কি-না, এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।
এর আগে বিকালে পরীমনির বাসায় ‘সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের’ ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয় বলে নিশ্চিত করেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
তারও কিছুক্ষণ আগে পরীমনি ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, তার রাজধানীর বনানীর বাসায় কেউ অভিযানে এসেছে। কে বা কারা তার বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন।
পরীমনি অভিযোগ করে জানান, তার বাসায় ‘বিভিন্ন পোশাকে’ লোকজন এসে ফ্ল্যাটের দরজা খুলতে বলছেন। কিন্তু তিনি দরজা খুলতে ভয় পাচ্ছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
লাইভে এসে পরীমনি বারবার অভিযোগ করেন, পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও কোনো সাহায্য পাচ্ছেন না। মিডিয়ার লোকদের বাসায় ডাকছেন তিনি। লাইভে পরীমনিকে বলতে শোনা যায়, ‘কারা যেন আমার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করছে। কেউ কালো কাপড় পরে আছেন, কেউ রঙিন কাপড় পরে আছেন। এরা কারা ভাই? আমি লাইভ কাটছি না। ’
লাইভে পরীমনিকে আরও বলেন, ‘পুলিশ হলে তো দরজা খুলেই দেব। কিন্তু তারা তো পরিচয় দিচ্ছে না। মেরে ফেললে সবার সামনে মেরে ফেলে যাক। আমি লাইভ কাটব না। সবাই দেখুক। সবাইকে দেখায় দেব, এরা কী কী করে।’
এর আগে গত ১৩ জুন পরীমণির একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে তোলপাড় হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে ওইদিন রাতে বনানীর নিজ বাসায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন পরী। সে রাতে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেন চিত্রনায়িকা। জানান, ৮ জুন ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা চালান ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ।
পরদিন সকালে এ ঘটনায় করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ (৬৫), তুহিন সিদ্দিকী অমি (৩৩), লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধাকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় এক হাজার পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ও বিয়ার।
ডিবির গুলশান জোনের উপপরিদর্শক মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন নাসির-অমিদের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার (২৩ জুন) আদালতে তোলা হয় নাসির-অমিকে।
পরীমনি এজাহারে উল্লেখ করেন, মদ পান করতে না চাইলে নাসিরউদ্দিন (১ নম্বর আসামি) জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমার সামনের দাঁত ও ঠোঁটে আঘাত পাই। সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে এবং আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
সান নিউজ/এমএইচ