বিনোদন ডেস্ক : বাবার কনজারভেটরশিপ থেকে মুক্ত হতে মার্কিন পপ গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের আবেদন নাকচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ২০০৮ সালে বিষণ্নতা ও অবসাদের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ব্রিটনি। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনজারভেটরশিপ আইনের অধীনে আদালতের আদেশে ব্রিটনির বাবা জিমিকে এই গায়িকার সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়। গত ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের জীবনযাত্রা ও আর্থিক সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তার বাবা।
২০২০ সালের নভেম্বরে লস অ্যাঞ্জেলেস আদালতে এ আবেদন করেছিলেন ব্রিটনির আইনজীবী। আবেদনে বলা হয়েছিল, ব্রিটনি তার বাবাকে ভয় পান।
গত সপ্তাহে ব্রিটনি বলেন, তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মানসিক রোগের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। তাকে জোর করে পারফর্ম করানো হয়েছে। এমনকি তাকে সন্তানও নিতে দেয়া হয়নি।
নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তের আবেদন : ব্রিটনি তার ওপর থেকে জেমির অধিকার বাতিলের আবেদন করে আদালতকে বলেন, 'আমি আমার জীবন ফিরে পেতে চাই।'
গত নভেম্বরে ব্রিটনি আদালতে আবেদন করেন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ফার্ম বেসেমার ট্রাস্টকে যেন তার একমাত্র আইনি অভিভাবক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আদালত জেমি স্পিয়ার্সকে ব্রিটনির আইনি অভিভাবকত্ব থেকে সরাতে রাজি না হলেও, বেসেমার ট্রাস্টকে পপ তারকার কয়েক মিলিয়ন ডলারের সম্পদের যৌথ অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব দিতে রাজি হয়েছেন।
এদিকে জেমি স্পিয়ার্সের আইনজীবীরা ব্রিটনির নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তের আবেদন করেছেন। ব্রিটনির আগের শুনানির অডিও লিক হয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর আদালত এবার দূর থেকে শুনানি শোনার অনুমতি দিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
ব্রিটনি যা বলেছেন : গত সপ্তাহে ব্রিটনি তার ওপর 'নিপীড়নমূলক' অভিভাবকত্বের বিস্ফোরক অভিযোগ করার পরই নেয়া হলো এ পদক্ষেপ।
ব্রিটনি বিচারককে বলেছেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দিনের পর দিন কেঁদেছেন। তাকে আরও সন্তান নিতে দেওয়া হয়নি। ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে সাইকায়াট্রিক ড্রাগ লিথিয়াম দেওয়া হয়েছে।
দুই সন্তানের মা ব্রিটনি জানিয়েছেন, তিনি তার প্রেমিককে বিয়ে করতে চান। আরেকটা সন্তান নিতে চান। কিন্তু তার আইনি অভিভাবক সে অনুমতি দেননি। ব্রিটনির দাবি, তাকে গর্ভনিরোধক ডিভাইস পরতে হয়েছে, যাতে আর সন্তান নিতে না পারেন।
ব্রিটনির ব্যক্তিগত জীবনে নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপের যে অভিযোগ তার বাবার বিরুদ্ধে উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন জেমি স্পিয়ার্সের আইনজীবীরা।
ব্রিটনিকে যারা সমর্থন দিচ্ছেন : এদিকে ডজনখানেক তারকা আওয়াজ তুলেছেন ব্রিটনির সমর্থনে। তাদের মধ্যে আছেন পপ তারকার সাবেক প্রেমিক জাস্টিন টিম্বারলেকও। তিনি লিখেছেন, তাদের দুজনের অতীতস্মৃতি ভালো-খারাপ যা-ই হোক না কেন, ব্রিটনির সঙ্গে যা হয়েছে তা ঠিক নয়।
দুই মিনিটের এক ভিডিয়ো বার্তায় ডিওন ওয়ারউইক বলেছেন, 'ওকে (ব্রিটনিকে) ওর অধিকার ফিরিয়ে দাও। ওর জীবন ফিরিয়ে দাও। ওকে মুক্তি দাও।'
ব্রিটনির সঙ্গে কাজ করা র্যাপার ইগি অ্যাজালিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, তিনি নিজ চোখে ব্রিটনির সঙ্গে এমন বাজে ব্যবহার দেখেছেন। তার দাবি, ২০১৫ সালে বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে মঞ্চের পেছনে থাকার সময় ব্রিটনিকে সোডা পান করতে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, 'ব্রিটনি স্পিয়ার্স যখন খোলাখুলি বলে দিয়েছে যে ওই লোকটার সঙ্গ তার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে, তখন তাকে আর লোকের সঙ্গে থাকার জন্য জোর করা উচিত নয়।'
ব্রিটনির বোন যা বললেন : গত সপ্তাহে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের বোন জেমি লিন প্রথমবারের মতো বোনের বিতর্কিত অভিভাবকত্ব নিয়ে মুখ খোলেন।
জেমি লিন স্পিয়ার্স এক ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে বলেন, 'সুখী থাকার জন্য অভিভাবকত্ব বাতিল...অথবা যা-ই করুক না কেন, তাতে আমার সমর্থন আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেক বছর আগেই ওকে আমি বলেছিলাম অভিভাবক নেওয়ার জন্য। অবশেষে ও সেই অনুরোধটা করল। ওকে নিয়ে আমি গর্বিত।'
জেমি অবশ্য বলেন, তিনি তার পরিবারের মুখপাত্র হয়ে কিছু বলছেন না—এটা তার ব্যক্তিগত মতামত।
সান নিউজ/এসএম