নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা : খুলনায় দুই হাজার টাকার কাঁচা পাট বিক্রি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছেন রফতানিকারকরা। চাহিদার তুলনায় যোগান সীমিত হওয়ায় পাটের দরের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি তাদের। ফলে বিদেশে রফতানি চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় কাঁচা পাটের সংকট দেখা দিয়েছে।
পরিবেশের কথা বিবেচনা করে দেশ-বিদেশে বাড়ছে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার। পাট রফতানিকারক দেশ হিসেবে খুলনা অঞ্চল থেকে কাঁচাপাট ও পাটের সুতার রফতানি হয়ে আসছে। প্রতিবছর কাঁচাপাট রফতানি হয়ে থাকে ১০ থেকে ১২ লক্ষ বেল। কিন্তু এই বছর এখন পর্যন্ত ৩ লক্ষ বেল কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে।
কাঁচা পাটের সঙ্গে বিদেশে চাহিদা বাড়ছে পাটের সুতার। এ কারণে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ২০ টি সুতা রফতানির কল। এই মৌসুমে পাটের দাম বাড়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পাট মজুদ করে সুবিধা ভোগের অভিযোগ রফতানিকারকদের।
খুলনা সুপার জুট মিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ ফিরোজ আহমেদ বলেন,'প্রান্তিক কৃষকরা এবার সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। তারা একসঙ্গে সব পাট বিক্রি না করে কিছু কিছু করে বিক্রি করেছেন।'
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস জানান,'এত দামের পাট তারাও তো বিক্রি করতে পারছে না।'
বিদেশে পাটের সুতার চাহিদা বৃদ্ধি এবং যোগান সীমিত হওয়ার কাঁচা পাটের দাম বাড়ছে বলে জানায় পাট অধিদফতরর। খুলনা পাট অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রাধে শ্যাম নাথ বলেন,'এ বছর প্রকৃতিগতভাবে পাট উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ডিমান্ড বেড়েছে। এ কারণে দাম বেড়ে গেছে।'
২০১৯-২০২০ অর্থবছর খুলনায় ১ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৮৫৪ বেল্ট। ২০২০-২০২১ অর্থবছর ১ হাজার ৫৬৬ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১৮ হাজার ২২ বেল্ট।
গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত লবণাক্ত সহনশীল বিভিন্ন পাট চাষের জন্য কৃষকের কাছে পৌছে দেয়ার কথা জানান কৃষি কর্মকর্তা।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান,'লবনাক্ত সহনশীল জাত হওয়াতে এ অঞ্চলে এটার চাষ হচ্ছে এবং ফলনও বেশি।'
বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী পাট উৎপাদন করতে পারলে, লাভবান হবেন কৃষক। আসবে বৈদিশিক মুদ্রা।
সান নিউজ/এসএম