নিজস্ব প্রতিনিধি, খাগড়াঝড়ি : সকাল হতেই ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের আনাগোনায় মুখরিত খাগড়াছড়ির শাপলাচত্বর। সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের এলাকায় লোকে লোকারণ্য। বাস থেকে দলে দলে নামছে পর্যটক। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে রওনা হচ্ছেন সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেকের দিকে।
সাধারণত শুক্র ও শনিবার সাজেকে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। করোনা মহামারির মধ্যে বছরের শেষে এসে বেড়েছে পর্যটকের চাপ। বর্তমানে পুরো সপ্তাহজুড়েই থাকে ভিড়। রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক। আয়তনের দিক থেকে যেটি দেশের বৃহত্তর ইউনিয়ন।
রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত সাজেক মূলত তিনটি পাড়া নিয়ে গঠিত। রুইলুই পাড়া, হামারি পাড়া, কংলাক পাড়া। পযর্টকরা মূলত রুইলুই এবং কংলাক পাড়ায় গিয়ে থাকেন। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে যার উচ্চতা প্রায় সাড়ে ১৭শ ফুট।
রাঙ্গামাটি জেলায় অন্তর্ভুক্ত হলেও সাজেকে যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। জেলা শহর থেকে আঁকা বাঁকা পথ দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে ছোট বড় হাজারো পাহাড়ে বেষ্টিত প্রকৃতির নিজস্ব সৌন্দর্যের। এখানে মূলত মেঘ-পাহাড়ের দারুন মিতালি মুগ্ধ করে পর্যটকদের। যতদূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের উপর শুভ্র মেঘের আনাগোনা।
সাজেকে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের রূপ দুটোই মুগ্ধ করে পর্যটকদের। এছাড়াও শীত, বর্ষা বা গরম সব পরিবেশে আপন রং ছড়ায় সাজেক। রোদ ঝলমলে সাজেকে হানা দেয় হঠাৎ বৃষ্টি। অনেক সময় আবার মুহূর্তে ঢেকে যায় মেঘের চাদরে। রুইলুই পাড়া থেকে কিছুটা দূরে কংলাক পাহাড়ের অবস্থান। এটি সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া।
এখান থেকে মিজোরাম পরিষ্কার দেখা যায়। এখানে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে নিচের পাহাড়গুলো নিয়ে খেলছে সাদা মেঘ। এছাড়াও সাজেকে বসবাসকারী পাহাড়িদের জীবন-সংস্কৃতি সম্পর্কে দেখার সুযোগ তো থাকছেই। মেঘের এই উপত্যকা ঘিরে দিনে দিনে বাড়ছে পর্যটকদের আগ্রহ। তাই সুযোগ পেলে সেখানে ছুটতে চাইছে সবাই।
তবে পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় রিসোর্ট-কটেজ মালিকরা। সাজেকে ছোট বড় মিলে প্রায় ১০০টির মতো কটেজ-রিসোর্ট রয়েছে। যার ধারণ ক্ষমতা দুই থেকে আড়াই হাজার পর্যটকের। তবে অধিকাংশ সময় পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে। এই কারণে রুমের ভাড়াও গুনতে হয় দ্বিগুণ।
সান নিউজ/এসএ