বিনোদন ডেস্ক : করোনাকালীন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সক্রিয় পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। প্রায়ই নিজের নতুন নতুন ছবি দিয়ে আর নানা রকম মন্তব্য করে সাড়া ফেলেন তিনি। কিছুদিন আগেও ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘সেক্সারসাইজ নয়, এক্সারসাইজেই গ্লো করছেন তিনি।’ এ নিয়ে অনলাইনে বয়ে গেল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সেটা শেষ হতে না হতেই জিমে তোলা ছবি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘জিমে গিয়ে ভুঁড়ি কমাতে পারেন, কিন্তু এক্ষুনি এর কোনো কারণ দেখছেন না।’
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) শ্রীলেখা মিত্রকে পেয়ে বসেছিল নস্টালজিয়া। জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার বিয়ের ১৭তম বছর উদ্যাপন করা যেত।
ফেসবুকে শ্রীলেখা জানান, ১৭ বছর আগে এ দিনে, অর্থাৎ ২০ নভেম্বর, বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। বিয়ের মুহূর্তের সাদা-কালো দুটি ছবি পোস্ট করে স্মৃতির ভাগ দিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আজ হতে পারত আমাদের ১৭তম বিবাহবার্ষিকী। আমার এক্স হ্যান্ডসাম না? এ কারণেই সেভাবে আর কাউকে মনে ধরল না...।’ এখানেই শেষ নয়, অনুরাগী ও অনুসারীদের সতর্ক করে তিনি লিখেছেন, ‘দুঃখের ইমোজি আর শুভ বিবাহবার্ষিকী বললে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেব।’
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে শিলাদিত্য সান্যালের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের। পরবর্তী সময়ে শ্রীলেখা আর বিয়ে করে সংসারী হননি। তাদের এক সন্তান, ঐশী। মেয়ে মায়ের কাছেই থাকে। তবে বাবার সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে। শ্রীলেখার নিজেও সাবেক স্বামীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন বলে জানা গেছে তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও ফেসবুকে দেওয়া মন্তব্যে।
শ্রীলেখার ছবি দুটির নিচে মন্তব্য করা হয়েছে শতাধিক, ৮ হাজার ৪০০ রি-অ্যাক্ট এবং ৭২টি শেয়ার হয়েছে পোস্টটি। মানুষের মন্তব্যের জবাবও দিয়েছেন শ্রীলেখা। সেসব বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, অন্য তারকারা যখন বিয়ে–বিচ্ছেদের মতো ব্যাপারগুলোকে ‘ব্যক্তিগত’ বলে এড়িয়ে যান, তখন স্পর্শকাতর এ বিষয় নিয়েও অকপট শ্রীলেখা। ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদককে শ্রীলেখা এমনও বলেছেন, জীবনসঙ্গী পছন্দের ক্ষেত্রে মানসিকতার পাশাপাশি বাহ্যিক রূপের দিকেও জোর দেন তিনি। এ ব্যাপারে তার একটু খুঁতখুঁতে ভাব আছে। তাই এত বছরে আর কাউকে বেছে নিতে পারেননি তিনি। এখনো তার চোখে সবচেয়ে ‘হ্যান্ডসাম’ তার সাবেক স্বামী।
শিলাদিত্যও কি বিশেষ দিনে এভাবেই মনে করেন শ্রীলেখাকে? কথা হয় তাদের? এমন প্রশ্নে শ্রীলেখা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মনে করে! হয়তো আমার মতো করে প্রকাশ করে না। আমাদের মধ্যে কোনো তিক্ততা নেই। ফলে, মনে না করারও কোনো কারণ নেই।
তা ছাড়া, আমার মধ্যে রসবোধ যথেষ্ট। নিজেকে নিয়ে মজা করতে ভালোবাসি। সেটা ফেসবুক পোস্ট আর ক্যাপশন দেখলেই বোঝা যাবে। আমার কোনো বিষয় নিয়েই ন্যাকামি নেই, সেটাও বুঝে গেছেন ভক্তরা।’
শ্রীলেখা মনে করেন, দুজন ভালো মানুষ চিরকাল এক ছাদের নিচে না-ও থাকতে পারেন। তবে বন্ধুত্ব রয়েই যায়। তাই শিলাদিত্য-শ্রীলেখার মেয়ে ‘হ্যাপি চাইল্ড’। তিনি বলেন, ‘আমরা একে অন্যের বাড়ি যাই। কথা হয়। শুধু ছাদটুকু শেয়ার করি না, এই যা।’
শ্রীলেখা এমনই। গ্ল্যামার জগতের বেশির ভাগই যেখানে নিজেকে নিখুঁতভাবে অনুরাগীদের সামনে তুলে ধরতে চান, শ্রীলেখা সেখানে কিছুটা ব্যতিক্রমী। নির্দ্বিধায় ভুঁড়ির ছবি পোস্ট করে নিজেকে নিয়ে মজা করতে পারেন। কে কী বলল, সেসব গায়ে মাখতে নারাজ সাহসী শ্রীলেখা। কয়েক মাস আগেই স্বজনপোষণ নিয়ে রীতিমতো নাম ধরে কয়েকজন বড় তারকার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন তিনি। সে সময় বেশ সমালোচনা হলেও বিব্রত না হয়ে বরং তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক অবাঞ্ছিতরা সরে গেছে।’
কয়েক মাস আগেই স্বজনপ্রীতি নিয়ে রীতিমতো নাম ধরে কয়েকজন বড় তারকার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন তিনি। সে সময় বেশ সমালোচনা হলেও বিব্রত না হয়ে বরং তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক অবাঞ্ছিতরা সরে গেছে।’
শিগগিরই মুক্তি পেতে পারে শ্রীলেখা ও শিলাজিৎ অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘১২ সেকেন্ড’। অংশুমান ব্যানার্জি পরিচালিত এই ছবিতে শিলাজিৎ ও শ্রীলেখা অভিনয় করছেন স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে। অন্যদিকে এবার পরিচালক হিসেবেও নাম লেখাতে যাচ্ছেন শ্রীলেখা। তার লেখা মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার নিয়ে তৈরি হবে ওয়েব সিরিজ। সেটার চিত্রনাট্য লিখেছেন শ্রীলেখা ও ইন্দ্ররূপ ভট্টাচার্য মিলে। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’য় খোক্কসী রানির ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। চরিত্রটি দিয়ে দীর্ঘ বিরতির পর ছোট পর্দায় ফিরছেন তিনি।
সান নিউজ/এসএম