বিনোদন প্রতিবেদক : যদি একজন ডাক্তারকে চিকিৎসা করতে হলে লাইসেন্স নিতে হয়! ভুল চিকিৎসা করলে তার বিচার হয়। এমন কি রাজনীতি করতে হইলেও নিবন্ধন করতে হয়! সিনেমা বানালে সেন্সর পাশ করতে হয়! কিন্তু ওয়াজের ক্ষেত্রে বিধান কি? যে ওয়াজ করতেছে তার ধর্মীয় জ্ঞান, মানবিক বোধ এইগুলা যাচাই করবে কে? সব হুজুরের এলেম বা মানবিক বোধ তো এক নয়। তাহলে এই হুজুরদের ওয়াজ করার নূন্যতম যোগ্যতা কি? এমনটাই জানতে চেয়েছেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারয়ার ফারুকী।
তিনি বলেন, “একবার ভাবেন, যে ছেলেটা ওয়াজে যায় সে এটা ভাবে যে হুজুর যা বলতেছে সেটাই ঠিক, ও সেখান থেকে কি শিক্ষা নিয়ে বের হচ্ছে! তারপর সেই শিক্ষার আলো সে যখন সমাজে ছড়াবে তখন সেই সমাজের চেহারা তো লালমনিরহাটের নারকীয় ঘটনার মতোই হবে!”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আরেকটা কথা, এই যে কথায় কথায় কারো মৃত্যুদন্ড চাওয়া, কাউরে কতল করতে চাওয়া এটা ফৌজদারি অপরাধ কিনা! ২০১০-য়ে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার রিলিজের পর যখন আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে মানব বন্ধন করতেছিলো একটা গ্রুপ (সম্ভবত হিজবুত তাহরীরের কিছু শিক্ষক এটার সাথে জড়িত ছিলো) এবং দাবি করতেছিলো আমার মৃত্যুদন্ড দিতে হবে, তখন আমি এক লইয়ার বন্ধুরে জিজ্ঞেস করছিলাম- এটা কি আমার বিরুদ্ধে ভায়োলেন্স ইনসাইট করা হচ্ছে না? তখন সে আমারে বলছিলো- তুমি তো জানো দোস্ত, দেশের নামে, ধর্মের নামে, জাতির নামে ভায়োলেন্স ইনসাইট করলে এটাকে বেশিরভাগ সময়ে মহৎ কাজ হিসাবে দেখা হয়।”
তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, লালমনিরহাটের ঘটনারে আমরা একটা লাস্ট সিগন্যাল হিসাবে নিতে পারি সমাজটারে ঠিক করার। আমি মোটামুটি ফেয়ারলি ধার্মিক পরিবারে বড় হইছি! ফলে ওয়াজ মাহফিল প্রচুর শুনতে হইছে ছোটবেলায়! আমি মনে করতে পারতেছিনা ঐসব ওয়াজ মাহফিলে আজকের মতো ঘৃণা, বিদ্বেষ, কতল করার আহবান শুনছি কিনা! রাষ্ট্রকে এইগুলা বিবেচনায় নিতে হবে!”
ফারকী বলেন, “যাতে আমরা বুঝতে পারি আমরা আর কোথায় কোথায় ভুল করছি! আপনি যখন একজন অপরাধীর ক্রসফায়ার চাইবেন, তখন নিজের অজান্তেই মবরাজত্বের পক্ষে ভোট দিলেন যেখানে ভালো মানুষকেও ক্রসফায়ার দেয়া যাবে! মবরাজত্বে ক্রসফায়ার ভালো কাজ, অবিশ্বাসীকে খুন করা ভালো কাজ! আমরা সেই মবরাজের বাসিন্দা হইছি বেশ কিছুকাল ধরেই! এটার রাশ এখনই টানা জরুরি!”
সান নিউজ/এস