বিনোদন ডেস্ক : প্রায় সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পর গেল ১৬ অক্টোবর দেশের সিনেমা হলগুলো খোলার অনুমতি দেয় সরকার। করোনাকালে বাংলাদেশে প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ‘সাহসী হিরো আলম’।
হিরো আলমের সিনেমা মুক্তির পর দর্শকদের তেমন চাহিদা না থাকায় ঢাকার কোনও বড় সিনেমা হল খোলেনি। ছোট যে হলগুলি খুলেছে সেখানে মাছি তাড়িয়েই কাটিয়েছেন বক্স অফিসের কর্মীরা। যার কারণে মুক্তির সাত দিনের মাথায় প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ ‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমাটি দেখানো বন্ধ করে দেয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এর প্রযোজক ও নায়ক হিরো আলম। তাঁর ধারণা, ছবিটি আরও বেশ কয়েক দিন ধরে প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ মালিক। কিন্তু আনন্দ ও ছন্দ প্রেক্ষাগৃহের মহাব্যবস্থাপকের বক্তব্যের কারণে, ছবিটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এমনটাই দাবি করেছেন হিরো আলম।
‘‘হিরো আলমকে দেখতে সিনেমা হলের বাইরে ভিড়, ভেতরে খালি‘’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। সেই খবরে আনন্দ ও ছন্দ সিনেমা হলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেছিলেন, ‘‘সিনেমা চললে, আমাদের খরচ আছে। অন্যান্য সময় খরচ উঠে এলেও এই ছবির ক্ষেত্রে পকেট থেকে টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এমনটা হবে, কোনো দিন ভাবিনি।’‘
হিরো আলমের ‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিটি আনন্দ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ১৬ অক্টোবর। আলমের দাবি, তার ছবি নিয়ে এ ধরনের বক্তব্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
হিরো আলম বললেন, ‘‘চেহারা ভালো না হওয়াই আমার অপরাধ।’’
এ কারণে কিছু হলমালিক ছবিটির দ্বিতীয় সপ্তাহের বুকিং বাতিল করেছে। এ ধরনের বক্তব্য তার নামে অপপ্রচার। তিনি এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতিতে অভিযোগ করার কথা জানিয়েছেন হিরো আলম। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি সূত্র জানিয়েছে, এ ব্যাপারে হিরো আলম মৌখিকভাবে একটা অভিযোগ দিয়েছেন। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ তারা পায়নি।
ছবিটি দেশের ৩৯টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। হিরো আলমের দাবি, বেশির ভাগ সিনেমা হলেই তার ছবি মোটামুটি ব্যবসা করেছে। তিনি আশা করেছিলেন দ্বিতীয় সপ্তাহে আরও কিছু সিনেমা হলে তাঁর ছবিটি দেখানো হবে। তাঁরা আমার ছবি নিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে অবশ্য আমি চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি এবং প্রযোজক সমিতিতে অভিযোগ করেছি।’
‘আনন্দ’ ও ‘ছন্দ’ সিনেমা হলের মহাব্যবস্থাপক কী মিথ্যা কথা বলেছেন, জানতে চাইলে হিরো আলম জানান, তাঁর ছবিটি গত চার দিনে আনন্দ সিনেমা হল থেকে ১৬ হাজার টাকা ব্যবসা করেছে। অথচ মহাব্যবস্থাপক বলেছেন মাত্র ৬ হাজার টাকা আয় করেছেন। এ ব্যাপারে সমিতি থেকে সুষ্ঠু বিচার না পেলে আনন্দ ও ছন্দ সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের নামে মামলা করবেন। গতকাল ২২ অক্টোবর থেকে ‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিটি আনন্দ সিনেমা হলে প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
হিরো আলম বলেন, ‘কয়েকজন সিনেমা হলমালিকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা কথা দিয়েছিলেন আমার ছবি নেবেন। কিন্তু আনন্দ সিনেমা হলের মহাব্যবস্থাপক বলেছেন, আমার ছবি নাকি সুপারডুপার ফ্লপ। গত চার দিনে ৬ হাজার টাকা আয় করছে এবং আমার ছবি মানহীন। এই মিথ্যা কথা শুনে অনেক হলমালিক পরের সপ্তাহের বুকিং বাতিল করেছেন।
এ ব্যাপারে ‘আনন্দ’ ও ‘ছন্দ’ সিনেমা হলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। ‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিটি কত টাকা ব্যবসা করেছে এটাই আমি অন্য সিনেমা হল মালিককে বলেছি। এখানে মিথ্যার কিছুই নেই। শিগগিরই ব্যবসার পরিমাণটাও জানাব।’
হিরো আলম আরও দাবি করেন, তার ছবি কীভাবে ‘ফ্লপ’ করানো যায় এ কারণে তৃতীয় একটি চক্র কাজ করছে। তাঁর ছবিকে ‘মানহীন’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। হিরো আলম বলেন, ‘“মানহীন” বলতে তাঁরা কী বোঝাতে চাচ্ছেন, সেটাই আমি বুঝতে পারছি না। আমার ছবি কেন মানহীন হবে। আমার ছবিতে রেহানা জলি অভিনয় করেছেন। তিনি শাকিব খান, মান্না, রুবেলের ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবিতে ন্যান্সি, প্রতীক হাসান গান করেছেন। গল্প ভালো। লোকেশনও ভালো। তারপরও তাঁরা বলেন আমার ছবি মানহীন।’
সান নিউজ/এম/এস