বিনোদন ডেস্ক : ১৯৯৮ সালের আজকের এই দিনে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন ঢাকাই সিনেমার অন্যতম পুরোধা জনপ্রিয় চিত্রনায়ক জসিম। ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক জসিমের আজ ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অস্ত্র হাতে ছুটে গিয়েছিলেন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য মুক্তি ছিনিয়ে আনতে। দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। যুদ্ধের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশে অনেকেই যখন শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন এদেশের সিনেমা শিল্পে, তখন তিনিও পা রাখেন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়ে।
তিনি ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দুই নম্বর সেক্টরে লড়াই করেছিলেন জসিম। ১৯৭২ সালে 'দেবর' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ১৯৭৩ সালে জসিম ‘রংবাজ’ ছবিতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। এ ছবির অ্যাকশন দৃশ্যগুলোও ছিল তার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা জ্যাম্বস ফাইটিং গ্রুপের করা। এই ছবিতে জসিম চলচ্চিত্র পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হলেও মূল পরিচিতি পান ‘দোস্ত দুশমন’ চলচ্চিত্রে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে।
সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সবুজ সাথী’ সিনেমায় প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন জসিম। এটি জনপ্রিয়তা পাওয়ায় পর খলনায়ক হিসেবে আর অভিনয় করেননি তিনি। বরং তিনি শোষিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন পর্দায়। এই চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মৃত্যুর আগপর্যন্ত নায়ক হিসেবেই অভিনয় করেছেন।
জসিম প্রায় ২০০ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ-নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামী’ ইত্যাদি। ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক।