জেলা প্রতিবেদক: ৭ জানুয়ারি শরীরে জ্বর নিয়ে বাসা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আল জাবের আহমেদ। পরদিন থেকে ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে তার শরীর। এ অবস্থায় পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটলে ১৩ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেকে) ভর্তি হন তিনি। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানায় হেপাটাইটিস ‘এ’ অর্থাৎ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বন্ধ থাকবে সব কোচিং সেন্টার
এভাবে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রেদোয়ান-উল হক নাসিফ। শুধু তারাই নন এভাবে হেপাটাইটিস ‘এ’ অর্থাৎ জন্ডিসে আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গত এক সপ্তাহে পরিসংখ্যানে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮ শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছেন এই রোগে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ পুরো ক্যাম্পাসে সাবমার্সিবল পাম্পের সংখ্যা খুবই কম। এদিকে টিউবওয়েল ও মোটরের পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এ রোগের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান রাবির মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকেরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল এবং একাডেমিক ভবনগুলোতে যেন বিশুদ্ধ পানির ব্যাবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুন: ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফিরোজ
রাবির মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪৬ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা করালে হেপাটাইটিস ‘এ’ অর্থাৎ জন্ডিস ধরা পড়ে ৬০ জন শিক্ষার্থীর শরীরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান শেখ জানান, শীতকালে ঠান্ডার কারণে মানুষ চলাচল কম করে যার ফলে রক্ত চলাচলও কম হয়। হেপাটাইটিস ‘এ’ ভাইরাসের কারণেই জন্ডিস হচ্ছে। এটি মূলত একটি পানিবাহিত রোগ। এ রোগ থেকে নিরাময় পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের সচেতনতা। যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকে তারা সাবমারসিবলের পানি খেতে হবে। ক্যাম্পাসে হোটেল ও ক্যান্টিন মালিকদের উচিত বিশুদ্ধ টিউবওয়েল বা সাবমার্সিবল পাম্পে তোলা পানি দিয়ে রান্নার কাজ করা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা। লক্ষণ খারাপ মনে হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে এসে ট্রিটমেন্ট নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সান নিউজ/এএন