নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেছেন, স্কুল খোলার আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় যেসব প্রস্তুতি নিতে হবে, সেগুলোই জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ফের স্কুল চালুর জন্য জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত যেসব নিয়ম মানতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রণালয়। সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার কোনো নির্দেশনা ছিলো না।
মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘স্কুল খোলার পরিবেশ তৈরি হলে প্রধান শিক্ষকদের গাইডলাইন অনুসরণ করে প্রস্তুতির নির্দেশ দেবো।’
‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকা’ প্রকাশের পরদিন বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান সিনিয়র সচিব।
ওই নির্দেশিকায় স্কুল খোলার ১৫ দিন আগে থেকে প্রধান শিক্ষকদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের জন্য রয়েছে বেশকিছু নির্দেশনা। এই নির্দেশনা জারির পর ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে যে, প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছি, স্কুল খোলার জন্য প্রস্তুতির যে নির্দেশিকার অনুমোদন দিয়েছি, সেটি বিদ্যালয় পর্যায়ে সরবরাহ করে সবাইকে অবহিত করতে। একই সঙ্গে সচেতনতা তৈরিতে পোস্টার ও লিফলেটের ব্যবস্থা করতে বলেছি।’
তিনি বলেন, যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর শর্ত প্রতিপালন করে বিদ্যালয় খুলে দিতে ওই নির্দেশিকা (স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান) তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশিকা অনুসারে, স্কুল খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্ক পড়া, হাত পরিষ্কার, থার্মোমিটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। প্রতিদিন কীভাবে ক্লাস পরিচালনা হবে, সে বিষয়ে দিক-নির্দেশনা নির্ধারণ করে আলাদাভাবে সাত ক্যাটাগরিতে ৫০টির মতো নির্দেশনা রয়েছে এই পরিকল্পনায়।
পরিকল্পনা অনুসারে, বিদ্যালয় খোলার সরকারি নির্দেশনার পর ন্যূনতম ১৫ দিন আগে শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
আগামী ০৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ- এতো আগে নির্দেশনা জারি প্রসঙ্গে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষকরা কিন্তু সরকারি কর্মচারী। লকডাউনের সময় অফিসগুলো বন্ধ ছিল। আমরা এখন অফিসগুলো খুলে সরকারি কাজ করছি।’
‘যখন আমরা মনে করবো যে, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, স্কুলগুলো খোলার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, তার আগেই আমাদের প্রধান শিক্ষক, কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেবো, এখন গাইডলাইন অনুসরণ করে স্কুলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করুন, প্রস্তুতি নিন। ’
সেই পরিস্থিতি এখন তৈরি হয়েছে কি না- প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘তা বলবো না। আপনারা তো বোঝেন।’
‘স্কুল খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা বলিনি যে, স্কুল খুলতে হবে, আজই তো প্রস্তুতি নেওয়া যাবে না। প্রস্তুতি নিতে তো সময় লাগবে। গ্রামে, রুট লেবেলে যে স্কুলগুলো আছে, সেখানে আমরা মনে করছি, এখনও পরিবেশ তৈরি হয়নি। আগামী ০৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছি। এখনও অনেক সময় আছে। ’
‘স্কুল খোলার আগে প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোনো গাইডলাইন ফলো করবেন। আমরা সেটি জানিয়ে দিয়েছি’- বলেন সচিব আকরাম।
‘সেখানে আমরা বলেছি, স্কুলগুলো পরিষ্কার করতে হবে। থাকতে হবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরতে হবে মাস্ক। যেসব স্কুলে ছাত্র সংখ্যা বেশি, সেখানে শিফটিং করতে হবে। একদিন এক শ্রেণিকে আনলে পরের দিন আনতে হবে আরেক শ্রেণিকে। ’
সচিব বলেন, ‘এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ খোলার পরিকল্পনা করবে। এই পরিকল্পনা প্রত্যেকটি স্কুলের জন্য এবং এতে সহায়তা করবেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। পরিকল্পনা অনুসারে স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে কি না, সেটি তারা তদারকি করবেন।’
সান নিউজ/ বি. এম./ বিএস/এআর/ Sun News