ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারের দায়ে ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা
এদের মধ্যে ২৭ জনকে পরীক্ষার শুরুতেই ডিভাইস পাওয়ায় বহিষ্কার করেন বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি শাহীন ফকির।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ভোলা শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও বিভিন্ন কেন্দ্রের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবৈধ উপায়ে পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাদের আটক করে।
পরীক্ষা চলাকালে আটক এ পরীক্ষার্থীরা অভিনব কায়দায় আধুনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে সরবরাহ করে। এরপর বাইরে থেকে উত্তর সরবরাহের মাধ্যমে তারা পরীক্ষা দেয়।
আরও পড়ুন: ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ
আটককৃতরা হলেন- সাইফুল ইসলাম (চরফ্যাশন), আব্দুল্লাহ আল মানুন (ভোলা), জাকির হোসেন (বোরহানউদ্দিন), আলাউদ্দিন (লালমোহন), পলাশ চন্দ্র (লালমোহন), হাজেরা বিবি (দৌলতখান), আকলিমা বেগম (তজুমদ্দিন), নাজরিন সুলতানা (বোরহানউদ্দিন), আছমা (বোরহানউদ্দিন), খাদিজা খানম মৌসুমী (বোরহানউদ্দিন), সুলতানা রাজিয়া (চরফ্যাশন), খাদিজা বেগম (লালমোহন), কামরুল হাসান (চরফ্যাশন), তানজিন (বোরহানউদ্দিন), ইমাম হোসেনসহ (চরফ্যাশন) আরও অনেকেই।
চাকরি প্রত্যাশীরা বলছেন, তারা পরীক্ষার জন্য সারা বছর প্রস্তুতি নিয়ে চাকরির জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এখন দেখছেন অনেকে লাখ টাকার ডিভাইস ও পরীক্ষার কক্ষের কন্ট্রাক্ট পার্টির সঙ্গে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে যোগাযোগ এবং চুক্তি ভিত্তিক পরীক্ষা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অসদুপায় অবলম্বন করে বিভিন্ন কেন্দ্রে উত্তর পাঠায়।
আরও পড়ুন: কলেজছাত্রকে কোপালো স্কুল শাখার ৩ ছাত্র
এতে প্রকৃত মেধাবীরা বারবার হেরে যাচ্ছে এদের কাছে। তাই অসাধু এ চক্রটিকে ধরে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান পরীক্ষার্থীরা।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানান, ভোলার বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল ১০ টায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা চলাকালীন কয়েকটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ নানা অসাদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ২২ জনকে আটক করে পুলিশে দেন।
এদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা। অসদুপায় অবলম্বন করায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরীক্ষার্থীরা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আটক ৩৫
এ ঘটনায় জড়িত জালিয়াতি চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খুঁজতে অনুসন্ধান চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ভোলা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাবেকুন নাহার জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, ভোলার ৭ টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৩৫০ টি শূন্য পদের বিপরীতে প্রায় ১৬ হাজার চাকরি প্রত্যাশী ৩০ টি কেন্দ্রে লিখিত (এমসিকিউ) নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
সান নিউজ/এনজে