বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবসায়িক নেতৃত্ব গড়ে তোলার স্বনামধন্য প্ল্যাটফর্ম 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'র ২০তম সংস্করণের সমাপনী অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকের ওপর চিকিৎসকদের হামলা
তরুণদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় এই প্রতিযোগিতায় এ বছরের চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর দল 'টিম খিচুড়ি'।
বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন আবির এরশাদ, মুহতাসিম বিন হাবিব ও মাশরিফ হাসান আদিব। চ্যাম্পিয়ন দল ‘সিনার্জি’ নামক উদ্ভাবনী এক প্রকল্পের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ের অন্য চার দলকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করে যাতে দেখানো হয় আবর্জনা থেকে পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস তৈরি করে কীভাবে সিলিন্ডারজাত করে স্বল্প খরচে সাধারণ জনগণের কাছে সরবরাহ করা যায়।
প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয় আর্মি ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন'র শিক্ষার্থী হাসরাত হুমায়ুন ও আজমাঈন বিন রশিদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সালমান সাঈদের দল ‘আযর আহাই’ এবং দ্বিতীয় রানার্সআপ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আলাভী রায়হান মাহিম, জুহায়ের আলী এবং যুনায়েদ মুবতাসিম ইসলামের দল ‘টুয়েন্টিজ টেনেন্টস’।
আরও পড়ুন: আজ বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তি শুরু
এ বছর দেশের ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮০০ জন প্রতিযোগী 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস' প্রতিযোগিতার ২০তম সংস্করণে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন দলটি বিশ্বের ৩৬টি দেশের বিজয়ী দলগুলোর সাথে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। বৈশ্বিকভাবে চ্যাম্পিয়ন দলটি তাদের ব্যবসায়িক উদ্যোগ শুরু করার জন্য প্রাথমিক তহবিল বা সিড ফান্ডিং হিসেবে ৫০ হাজার পাউন্ড লাভ করবে।
এবারের 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস' ইএসজি (পরিবেশগত, সামাজিক ও সুশাসন) প্রতিপাদ্যের সাথে সম্পর্কিত জ্বালানি, প্রযুক্তি, কৃষি ও অন্তর্ভুক্তি এই চারটি চ্যালেঞ্জ ঘিরে অনুষ্ঠিত হয়। দলগুলোকে একটি চ্যালেঞ্জ বেছে নিতে বলা হয় এবং বাস্তব সমস্যা মোকাবেলায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবসায়িক সমাধান তৈরি করতে বলা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তাঁর বক্তব্যে তিনি দেশের তরুণদের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন; পাশাপাশি, দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব রাখার লক্ষ্যে তরুণদের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তি ২৬ আগস্ট
তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদানের মাধ্যমে নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ ও সার্বিকভাবে মানবসম্পদ উন্নয়নে টেকসই ভূমিকা রাখার জন্য তিনি 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস' উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান জনাব গোলাম মইন উদ্দীন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব শেহজাদ মুনিম ও হেড অব ট্যালেন্ট, কালচার অ্যান্ড ইনক্লুশন জনাব সাদ জসিম সহ প্রতিষ্ঠানটির নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিএটি বাংলাদেশের উদ্যোগ 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস' তরুণদের নেতৃত্বগুণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে, সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করে এবং একইসাথে তরুণরা যেনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফল হতে পারে, সে অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করে তোলে।
আরও পড়ুন: নতুন বই নিয়ে কোনো ধরনের সংকট নেই
২০০৪ সালে মাত্র চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে এ প্রতিযোগিতা শুরু হলেও সময়ের পরিক্রমায় এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাংলাদেশের ২২টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'র সাথে সম্পৃক্ত।
এছাড়াও বিশ্বের ৩৬টি দেশে 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'র কার্যক্রম রয়েছে, যা এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতাকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'র ২০ বছরের যাত্রা দেশের ৩০ হাজারের অধিক তরুণদের দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে এক অনন্য মাইলফলক। আগামী প্রজন্ম কীভাবে বিভিন্ন খাতে নতুন মাত্রা যুক্ত করছে এবং উদ্ভাবনী ধারণা, অগ্রণী প্রযুক্তি ও দূরদর্শী সমাধানের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছে– তাই তুলে ধরে 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'।
উল্লেখ্য, 'ব্যাটেল অব মাইন্ডস'র ১৭০০’র বেশি অ্যালামনাই রয়েছেন, যারা দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন খাতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
সান নিউজ/এইচএন