নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘সাড়ে ১২ হাজার টাকায় ১৫ দিনও চলা যায় না। সেখানে একমাস চলবো কীভাবে? এ বেতনে চাকরি করছেন মাধ্যমিক শিক্ষকরা। এটা লজ্জার। এ বৈষম্য দূর না করা পর্যন্ত আমরা স্কুলে ফিরে যাবো না। আমাদের সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরাও আছে, অভিভাবকরাও আছেন। গভর্নিং বডির সদস্যদেরও সম্মতি আছে। শুধু শিক্ষামন্ত্রী আর মাউশি আমাদের সঙ্গে নেই। তাদের কারণেই জাতীয়করণ আটকে আছে।’
আরও পড়ুন: শুক্রবার এসএসসির ফল প্রকাশ
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলেন যশোরের মণিরামপুর থেকে আন্দোলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসা সহকারী শিক্ষিকা রেবেকা খাতুন।
পাশে বসে থাকা একই প্রতিষ্ঠানের মো. তবিবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারী সবাই অঙ্গীকারনামায় সই করেছি। তারপর একসঙ্গে এখানে এসেছি। অঙ্গীকার করেছি- জাতীয়করণ ছাড়া ক্লাসে ঢুকবো না। মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর) শোকজ করুক, কিংবা অনুপস্থিতির তালিকা করুক, তাতে আমাদের কিছুই যায় আসে না।’
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা জানান, প্রায় সব স্কুলে অঙ্গীকারনামার একটি ফরম বানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, জাতীয়করণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে ক্লাস বয়কট করে শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেবেন। যতদিন আন্দোলন চলবে, কেউ ক্লাসে ঢুকবেন না। এতে সই করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। যাদের সাধ্য আছে, তারা ঢাকায় এসে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সিলেবাস নিয়ে মাউশি’র ৬ নির্দেশনা
সারাদেশ থেকে চলতি মাসের গত ১১ তারিখ হতে বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) ডাকে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকায় এসে আন্দোলনে যোগ দেন। এরপর টানা ১৬ দিন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বুধবার (২৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ১৬ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। তাদের এক দফা দাবি- মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে সরেজমিন দেখা গেছে, পল্টন মোড় থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত রাস্তার একপাশে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি করছেন শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের আন্দোলনের উসকানি আছে
ফলে ওই রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের আরেকপাশেও অনেক শিক্ষকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে ওই সড়ক দিয়ে কিছুটা যানচলাচল করছে।
পটুয়াখালী জেলা বিটিএ’র সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, ‘বহু চেষ্টা করেও আন্দোলন দমানো যায়নি। আমাদের কেউ আর ফেরাতেও পারবেন না। যদি প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেন, তাহলে আমরা ঘরে ফিরে যাবো।’
বিটিএ’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন- শিক্ষকরা নাকি চলে গেছেন। উনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি- আজ এসে দেখে যান।
আরও পড়ুন: স্কুলে অনুপস্থিত ৩৪ শিক্ষককে শোকজ
পল্টন থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত শিক্ষকরা দখলে নিয়ে আন্দোলন করছেন। আরও অনেক শিক্ষক আসছেন। দাবি আদায় করেই আমরা স্কুলে ফিরবো।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরাও আমাদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে। অভিভাবকরাও আমাদের সঙ্গে আছেন। তারাও সন্তানদের ২০ টাকা বেতনে পড়াতে চান।
শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো- উসকানি না দিয়ে বরং আপনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দাবি পূরণে আলাপ করুন। সেটাই দেশের শিক্ষার জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
সান নিউজ/এইচএন