নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাকালের ‘নিও নরমাল’ যুগে অন্যান্য পেশার লোকজন ধীরে ধীরে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে পারলেও বিভিন্ন কারণে রাজধানীতে টিউশনি সংকট বাড়ছে। এতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বাড়তি আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসারে টানাটানি বাড়ছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীরা টিউশনি সংকটের কারণে খণ্ডকালীন চাকরিতে প্রবেশ করছে। যা অ্যাকাডেমিক ও চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে তাদের শিক্ষাজীবন এবং ভবিষ্যৎ চাকরি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বলছেন, রাজধানীতে অনেক ইমাম-মুয়াজ্জিন মসজিদে চাকরির পাশাপাশি বাসা-বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের কোরআন ও ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এর বিনিময়ে তারা একটা হাদিয়া (অর্থ) পান। এই বাড়তি অর্থ তাদের সংসারের চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো। করোনার কারণে গত এপ্রিল থেকে এই আয় বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমান ‘নিও নরমাল’ সময়ে সবকিছু খুলে গেলেও অভিভাবকরা গৃহশিক্ষক রাখছেন না। আবার করোনার কারণে বাড়িতে অপরিচিত লোকদের প্রবেশ সংরক্ষিত থাকায় গৃহশিক্ষকও রাখতে পারছেন না অনেক অভিভাবক। এছাড়া আয় কমে যাওয়া রাজধানীর অনেক মানুষ পরিবারকে গ্রামে রেখে এসেছেন। সবকিছু মিলিয়ে রাজধানীতে টিউশনির সংকট বাড়ছে।
টিউশনির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের খরচ চালাতো। আবার অনেকে টিউশনি করে নিজের খরচ চালাতো, পরিবারে অর্থ পাঠাতো। এর বাইরে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিতে থাকা শিক্ষার্থীরাও টিউশনি করে খরচ চালাতো। কিন্তু করোনার কারণে টিউশনি বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। কিন্তু আর্থিকভাবে একেবারে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা, যাদের টিউশনি টাকায় পরিবারের বড় একটা খরচ নির্বাহ হতো, তারা খণ্ডকালীন বিভিন্ন চাকরি সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে সারা দিন চাকরি পরিশ্রম শেষে অ্যাকাডেমিক পরীক্ষা এবং চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির লেখাপড়া করা সম্ভব হচ্ছে না।