সান নিউজ ডেস্ক: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।
আরও পড়ুন: বিমা কোম্পানির বদনাম হোক, চাই না
বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারের কথা জানান ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
বহিষ্কৃতরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও ইবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাওয়াবিয়া।
আরও পড়ুন: অনেক জঙ্গিকে খুঁজে বের করেছি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থি, অপরাধমূলক ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী, কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, ইসরাত জাহান মিম, হালিমা খাতুন উর্মী ও মুয়াবিয়া জাহানকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।
এদিকে ঘটনার পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এর তিনদিন পর বুধবার জড়িত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই হলের প্রভোস্ট ড. শামসুল আলমকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে ইবির হলগুলোর সিসিটিভি মনিটরিং বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন তিনুবু
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিক আরাফাত বলেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে ছাত্রলীগে কারও স্থান হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না। আমরা কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
বহিষ্কারাদেশ স্থায়ী নাকি অস্থায়ী জানতে চাইলে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘আমাদের উৎসগুলো থেকে তথ্যের ভিত্তিতে বহিষ্কার করেছি। এ ঘটনায় সবার সংশ্লিষ্টতা আছে এটা নিশ্চিত। এখন অপরাধ কতটুকু এটা তো বিবেচ্য বিষয়। এখানে তাদের ভুল বা অন্যায় যেটাই হোক তার গভীরতার ভিত্তিতে বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে। এটা স্থায়ীও হতে পারে, অস্থায়ীও হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ৫ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ফুলপরী। নির্যাতনের অভিযোগ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। এতে আইন বিভাগের অধ্যাপক রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাৎকার শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। এরই মধ্যে নির্যাতনে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর স্থায়ী আবাসিকতা বাতিল করেছে হল কর্তৃপক্ষ।
সান নিউজ/এমআর