আদিল সরকার, ইবি : বেলা ঠিক ১২টা। স্কুল শেষে বই-খাতা কাঁধে বাড়ি ফিরছিলেন ছোট্ট রুকাইয়া। সাথে একাধিক সহপাঠী আর মায়ের কাছে যাওয়ার হাসিমাখা মুখ। এগিয়েও গিয়েছিলেন অনেকটা পথ।
আরও পড়ুন : নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ে ৬ ঘর ভস্মীভূত
তবে শেষ হয়নি তার বাড়ি যাওয়ার পথটুকু৷ পিচঢালা পথেই পিষে যায় রুকাইয়ার হাসিমাখা মুখটি। লাল রঙ্গের গাড়িটি নিমিষেই নিভিয়ে দিয়ে যায় জলন্ত এক স্বপ্নকে। যার নিঃস্বতায় আজ নিস্তব্ধ গোটা পরিবার।
রুকাইয়া নেই আজ চার-চারটি দিন। স্কুল শেষে বই-খাতা নিয়ে এখন আর ঘরে ফিরে আসে না সে। বলে উঠে না বাবা আজ কিন্তু আমায় ঔই চকলেটটা কিনে দিতেই হবে।
মায়ের কাছে আর বায়না ধরে না মাংস খাওয়ার। বিকেল হলেই ছোট বোনকে নিয়ে ছোটাছুটি করতেও বের হয়না সে৷ সবকিছু থেকেই আজ চিরতরের জন্য আলাদা রুকাইয়া নামের মেয়েটি।
আরও পড়ুন : তেঁতুলিয়ায় টিউলিপ বাগানে ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত
যে এখন শুধুই স্বপ্ন। তার কথা মনে করে এখনো চিৎকারে ফেঁটে উঠছে দুখিনী মায়ের মলিন মুখটি। রাতের আধারে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছেন বাবা নামক কঠিন মানুষটাও। আঁতকে উঠছেন স্বজনরা। এই শোক কেটে উঠার সময় হয়তো হবে না তাদের। এভাবেই প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে কতশত রুকাইয়া। দেশে কিংবা বিদেশে। এইভাবেই নয়তো অন্যভাবে।
নিষ্ঠুরভাবে হারিয়ে যাওয়া রুকাইয়াদের আর খোঁজা হয় না। তবে দিব্বি আয়েশের মধ্যেই সময় কাটান দামি গাড়ির এই মালিকেরা। যাদের চাকায় লেগে থাকে মানু্ষের তাজা রক্ত। কদিন বাদেই কেটে যায় সব ঘোর। শুধু নিস্ব হয়ে উঠে এক একটি পরিবার৷ হয়তো বিচারের আশায় দিনাতিপাত করে যায় কেউ কেউ। কেউবা যেতেও পারে না বিচারের সেই দরজায়। বেলাশেষে কে ই বা নেয় তাদের খোঁজ.....!
আরও পড়ুন : ঠাকুরগাঁও সাংবাদিক ইউনিয়নের কমিটি গঠন
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষিকার গাড়ি চাপায় মৃত্যু হয় স্কুল ছাত্রী উম্মে রুকাইয়ার (১১)। শিরিনা বিথির নামের ওই শিক্ষিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি।
ঘটনার সময় ওই শিক্ষিকা তার গাড়িতেই ছিলেন। তবে তার ব্যক্তিগত ড্রাইভার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন সে। ঘটনায় এখনো কোন অভিযুক্ত মামলা হয়নি৷ তবে অপমৃত্যুর মামলাতেই শেষ হয়েছে হৃদয়বিদারক এই কাহিনীর।
সান নিউজ/এইচএন