নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসাগুলোর (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) ‘স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন’ হবে শনিবার। দেশের ২২ হাজার ৯২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নির্বাচনকে সামনে রেখে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, “শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখন-শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকদের সহায়তা করা, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে সহযোগিতা করা, শিখন-শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়াও ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই নির্বাচন হচ্ছে।”
এবার দেশের ২২ হাজার ৯২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন হবে। এরমধ্যে ১৬ হাজার ৩৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৬ হাজার ৫৪২টি দাখিল মাদ্রাসা। এক লাখ ৮৩ হাজার ৪০৮টি পদে নির্বাচনে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯১৬ জন শিক্ষার্থী ভোট দেবে।
সচিব জানান, এ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং অফিসারসহ শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বও থাকবে শিক্ষার্থীদের উপর। শিক্ষক, পরিচালনা পর্যদ এবং অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবেন।
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীই ভোটার জানিয়ে মাহবুব বলেন, ভোটার তালিকাভুক্ত যে কোনো শিক্ষার্থীর এ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ আছে।
প্রত্যেক ভোটার প্রত্যেক শ্রেণিতে একটি, সর্বোচ্চ তিন শ্রেণিতে দুটি করে মোট আটটি ভোট দিতে পারবে। প্রত্যেক শ্রেণি থেকে একজন করে পাঁচটি শ্রেণি (ষষ্ঠ-দশম) থেকে পাঁচজন ও পরবর্তী সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তিন শ্রেণির তিন জনকে নিয়ে এক বছরের জন্য আট সদেস্যর মন্ত্রিসভা গঠিত হবে।
সচিব জানান, কেবিনেটের কর্মপরিধিতে থাকবে পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য; ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপন ও বাগান তৈরি, দিবস পালন ও অনুষ্ঠান সম্পাদন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে প্রথম বৈঠকে বসবে কিশোর শিক্ষার্থীদের মন্ত্রিসভা।
এই বৈঠকে ‘কেবিনেট প্রধান’ নিজেদের মধ্যে কর্মবণ্টন, সহযোগি সদস্য মনোনয়ন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা করবে।
স্টুডেন্ট কেবিনেটকে মাসে কমপক্ষে একটি সভা করতে হবে জানিয়ে সচিব মাহবুব বলেন, শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেবেন। প্রতি ছয় মাস পর সব শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ক্যাবিনেটের সাধারণ সভা হবে।
“নির্বাচিত প্রতিনিধিরা উক্ত সভায় তাদের কাজের জন্য একক ও যৌথভাবে দায়বদ্ধ থাকবে। যেসব সদস্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বা অপারগ হবে তারা পদত্যাগ করবে এবং পরবর্তী অধিক ভোটপ্রাপ্ত সদস্যকে ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”
এক প্রশ্নে সচিব জানান, ধীরে ধীরে কারিগরি ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই নির্বাচন আয়োজন করা হবে।