জান্নাত জাহান জুঁই, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা আজ মঞ্চস্থ করল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৪ টি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ মানসী, সোনার তরী,বলাকা, পুনশ্চ। এগুলোর তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক এবং ‘২০৫: রবীন্দ্র সাহিত্য-১’ কোর্সের কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী।
আরও পড়ুন: আমরা ‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাস করি
এটি ছিলো মূলত উক্ত কোর্সের পাঠ ও শিক্ষার অংশ। কাব্যগ্রন্থ চারটির পরিবেশনার নির্দেশনায় ছিলেন ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে। ড. আহমেদুল বারী শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক মেহেদীউল্লাহ্ ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী। বৈচিত্র্যপূর্ণ সৃষ্টিসম্ভারে রবীন্দ্রপ্রতিভা বিকশিত হলেও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তার কাব্য রচনারই প্রাচুর্য পরিলক্ষিত হয়। ভাবের বহুমুখীতা থাকলেও জগৎ ও জীবনের প্রতি কবির ভালবাসা ছিল প্রবল। মর্ত্যপ্রীতির নিদর্শন তার কাব্যে বিধৃত। প্রকৃতিপ্রীতি, অধ্যাত্ম অনুভূতি, মানবতাবোধ, বিশ্বজনীনতা তার কাব্যের বৈশিষ্ট্য। তার ব্যক্তিগত অনুভূতি সর্বকালের সর্বমানবের হৃদয়ভাবের পরিচায়ক হয়ে অনবদ্য কাব্যরূপ পরিগ্রহ করেছে।
আরও পড়ুন: সৈয়দপুর আদর্শ কলেজের জায়গা দখল করে বহুতল স্থাপনা নির্মাণ
উল্লেখ্য, টিম ‘মানসী’ দলগতভাবে কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, কাব্যনাট্য উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে টিম ‘সোনার তরী’ দলগতভাবে কবিতা আবৃত্তি, নাচ, গান করেছে এবং তার সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত ‘অপরিচিতা’ গল্পটি নাটকের আকারে উপস্থাপন করেছে। টিম ‘বলাকা’ ও ‘পুনশ্চ’ নাটক, নাচ, গান, আবৃত্তির মাধ্যমে তাদের পরিবেশনা সম্পন্ন করেছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও কাব্যগ্রন্থগুলো বিভিন্ন সময়ে পরিবেশিত হলেও তারা নব আঙ্গিক ও সীমিত সময়ের মধ্যে এর সারকথা শিল্পসম্মতভাবে পরিবেশিত করতে সমর্থ হয়েছেন, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: আতঙ্কে স্কুল আসছে না শিক্ষার্থীরা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চারটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ একই মঞ্চে পরিবেশনার মাধ্যমে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক নতুন ইতিহাস গড়ল। সর্বোপরি, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মনন গঠনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এ ধরনের প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
এই সম্পর্কে ড. আহমেদুল বারী বলেন, ‘এটি ব্যবহারিকের একটা অংশ। এর মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনার দক্ষতা, বাচনভঙ্গির দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।বাংলাদেশে একমাত্র জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্স সমাপনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একজন শিক্ষক মাওলা প্রিন্স এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। কিছুদিনের মধ্যে আরও কয়েকটা নাটক বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে মঞ্চায়িত করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার আয়োজন করে আসছে।
সান নিউজ/কেএমএল