মোঃ দেলোয়ার হোসেন : হুইসেল ও ক্রিয়েটিভ আইটি ইন্সটিটিউটের যৌথ উদ্যোগে শুরু হলো তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন : বড়পুকুরিয়ায় ফের কয়লা উত্তোলন বন্ধ
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কেআইবি কমপ্লেক্সে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন হয়। সেই সঙ্গে আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এর শুভ সূচনা করা হয়।
উপস্থাপক সোলাইমান আহমেদ জিসান ও সাদিয়া রোশনি সূচনার উপস্থাপনায় জাতীয় সংগীত এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা এক ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ ধরে তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছেন। বাংলাদেশের তরুণদেরকে যাতে বিশ্বমানের আইটি জ্ঞানসমৃদ্ধ করা যায় সে ব্যাপারে আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন দেশের আইসিটি, শিক্ষা ও গবেষণা সেক্টরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আরও পড়ুন : মনীষা পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু নারী ডিএসপি
তরুণদের উৎসাহ দিতে এবং এই প্রতিযোগিতার সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব বিকর্ণ কুমার ঘোষ , এ-টু-আই এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও যুগ্ম সচিব জনাব ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ন কবির, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য ও বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর জনাব ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার ,বিসিএস এর প্রেসিডেন্ট জনাব সুব্রত সরকার ও বাংলাদেশ- মালেয়শিয়া চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ও বেসিস এর সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব সৈয়দ আলমাস কবির শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করে এই প্রতিযোগিতাকে সফল করতে তারা সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এ-টু-আই এর ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট জনাব মোঃ শাহরিয়ার হাসান জিসান, নিজের বলার মতো একটি গল্পের প্রেসিডেন্ট জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ ,ওমেন এই জি এফ এর কনভেনর মিসেস ফারহা মাহমুদ তৃনা, তিলোত্তমা চট্টগ্রাম এর অ্যাডভাইসর মিসেস সাহেলা আবেদীন, ই- ক্যাব এর অর্থ সম্পাদক জনাব আসিফ আহনাফ, বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডাঃ তানজিবা রহমান।
এই প্রতিযোগিতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা যাতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই লক্ষ্যে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকছে আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ-এর বুথ। প্রতিযোগিতাটিতে কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন গভর্নিং বডির অন্যতম সদস্য আশরাফুল ইনসান ইভান।
আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের কনভেনর শামিমা বিনতে জলিল এর শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর প্রজেক্ট ডিরেক্টর সোহাগ মিয়া উপস্থিত দর্শক ও সম্মানিত অথিতিদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ধরণ ও নিয়মগুলো তুলে ধরেন।
এই প্রতিযোগিতায় প্রি-স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা (সৰ্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত ) মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে অংশ নিতে পারবেন, যাতে শিক্ষা বীমা , স্বাস্থ্যবীমা, কোর্স, ইন্টারন্যাশনাল স্টাডি ট্যুর, বুটক্যাম্পসহ থাকছে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার প্রাইজমানি ।
আরও পড়ুন : ফের বেড়েছে মৃত্যু ও শনাক্ত
গভর্নিং বডির সদস্য আরেফিন দিপু বলেন, ২০২১ সালে আমরা প্রথমে আইসিটি শিক্ষাকে সরকারের পাশপাশি কিভাবে জনপ্রিয় করে তোলা যায় সেই চিন্তা থেকেই এই প্রতিযোগিতার কার্যক্রম শুরু এবং ২০২২ সালের ১৬ই জানুয়ারি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি এই আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের শুভ সূচনা করে আমাদের সাহস আরো বাড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সবাই এগিয়ে এসেছেন বলে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
গভর্নিং বডির আরেক সদস্য ও তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোহাম্মদ শাহরিয়ার খান বলেন, চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবে আমাদের শিক্ষার্থীদের সময়োপযোগী করার জন্য এই প্রতিযোগিতাটি মাইলকফলক হয়ে থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় রেজিস্ট্রেশন করার পর থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা দক্ষ মেন্টরদের মাধ্যমে নিজেদের আইসিটি জ্ঞানকে প্রসারিত করে নিতে পারবে।
আইসিটি খাতে বিশ্বমানের জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যাতে এগিয়ে থাকে সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ আয়োজিত হচ্ছে বলে জানান তিনি এবং শিক্ষার্থীদের বয়সের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ১০ টি সেগমেন্টের জন্য বিভিন্ন কোর্স ও বই ইতিমধ্যে তারা তৈরী করেছেন বলেও জানান।
আরও পড়ুন : শুটিং সেটে ৮ মডেলকে ধর্ষণ
আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ-এর গভর্নিং বডির সদস্য ও ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের সিইও মনির হোসেন বলেন, প্রি-স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় (পয়ত্রিশ বছর বয়স) পর্যন্ত আইসিটি শিক্ষাকে জনপ্রিয় করে তুলতে আমাদের এই আয়োজন। শুধুমাত্র শিক্ষার্থী নয় আমরা চাই সকল অভিভাবকও এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আইসিটি শিক্ষাকে ভয় না পেয়ে ভালোবাসুক এবং সেই ভালোবাসা তার সন্তানদের সাথে সাথে সমাজেও ছড়িয়ে দিক।
কারণ তিনি মনে করেন আমাদের দেশে আমাদের এই প্রজন্মকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হলে অভিভাবক ও শিক্ষকদের আগে এগিয়ে আসতে হবে।
তারুণ্যদীপ্ত এই প্রতিযোগিতাটিতে নলেজ পার্টনার হিসেবে রয়েছে ই-লার্নিং প্রতিষ্ঠান ব্রাইট স্কিলস, লজিস্ট পার্টনার হিসাবে আছে ই- কুরিয়ার, ই-লার্নিং পার্টনার এডুহাইভ, পেমেন্ট পার্টনার আমার পে।
অনুষ্ঠানের শেষ অংশে সকল শিক্ষক, মেন্টর, ডিভিশন এম্বাসেডর , জেলা এম্বাসেডর , সেন্ট্রাল টিম ও ভলান্টিয়ারদের মধ্যে পুরস্কার ও ক্রেস্ট বিতরণ করে অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ থিম সং পরিবেশন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকবৃন্দ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইসিটি অলিম্পিয়াড এর ওয়েবসাইট https://ictolympiadbangladesh.com সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন।
সান নিউজ/এইচএন