ইবি প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগের অনেক সংগঠন রয়েছে যা সবাই করতে পারে কিন্তু বঙ্গবন্ধু'র নাম ভাঙ্গিয়ে সংগঠন খুলে অপকর্ম চালাবে তা মেনে নেয়া হবে না। জাতির পিতার নামের সংগঠনে কোন তামাশা চলবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে তারা কখনো শহীদ বেদিতে এভাবে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হাতাহাতি করতে পরে না। তারা সম্পূর্ণভাবে আদর্শচ্যুত।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি
শনিবার (০২ এপ্রিল) সংবাদ সম্মোলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে এসব কথা বলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন৷ এসময় তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট নামের একটা কুচক্রিমহল বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্ম শুরু করেছে। যা খুবই দুঃখজনক। একসাথে কাজ করার জন্য আমরা তাদের সাথে একাধিকবার কথা বলে ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা বসেন নি। বরং কেন্দ্রের বাহিরে গিয়ে নতুন সংগঠনের রুপ দিয়েছে। সেই সাথে নানা কুকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের সকল অপকর্মের বিষয় আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি। কেন্দ্র থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু পরিষদই বৈধ কমিটি ও তারাই ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালাবে বলে জানানো হয়েছে। আমরা এই কুচক্রীমহলকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবো।
জানা যায়, গত ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি ডা. এস এ মালেক স্বাক্ষরিত একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমিটিই একমাত্র বৈধ কমিটি বলে জানানো হয়। সেই সাথে মেয়াদ থাকা পর্যন্ত এ কমিটিই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে নিশ্চিত করা হয়। কেন্দ্র থেকে দেয়া এই বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি অবহিতির জন্য আজ শনিবার (২ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র ঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
আরও পড়ুন: টিপুকে হত্যার মাস্টারমাইন্ডসহ গ্রেফতার ৪
এসময় পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড জাহাঙ্গীর হোসেন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড মাহবুবুল আরফিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড শাহজাহান মন্ডলসহ পরিষদে সিনিয়র নেতা অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ, সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনসহ অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন৷ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সরকার মাসুম (যুগান্তর), সাধারণ সম্পাদক তারিক বিন নজরুল (বাংলা নিউজ ২৪) সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ও সাংবাদিক সমিতির কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দূর্নীতিবাজ ও অযোগ্য প্রশাসনের মূলোৎপাটনের পর সবার প্রত্যাশা ক্যাম্পাসে সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ। ঠিক তখন ঐ চক্রের প্রশাসনেরই কতিপয় সুযোগসন্ধানী ও সুবিধালোভী ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তাদেরকে আদর্শচ্যুত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে হট্টগোল, গালাগালি ও বিশৃঙ্খলা পরিবেশ তৈরি করে স্বাধীনতার মহিমাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এই অপকর্ম করতে তারা সক্রিয়ভাবে ও সুচতুরতার সাথে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ পরিষদ শব্দ ব্যবহার করে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে৷ যাদের সাথে জড়ো হয়েছে অর্শচ্যুত, স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ, অনুপ্রবেশকারী, মধাস্বত্বভোগী একদল ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু
কোন সংগঠন খুলতে নিয়ম, রীতিনীতি, শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়৷ বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র থেকে দেশের বিভিন্ন ইউনিটে দেয়া কমিটি কার্যক্রম করে যাচ্ছে। একইভাবে আমদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া সর্বজন গ্রহণযোগ্য কমিটির বিরুদ্ধে গিয়ে একটি তথাকথিত কমিটি ঘোষণা দিয়ে ঐ চক্রটি অপকর্ম চালাচ্ছে। ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে এই স্বার্থান্বেষী চক্রকে তাদের সকল তৎপরতা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে সতর্ক করেন। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু পরিষদ নাম ব্যবহার করে অন্য কোন সংগঠন গড়ে তুলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপপ্রয়াস থেকে দূরে সরে যেতে আহবান জানান । কিন্তু তারা তা প্রতিপালন তথা কর্ণপাত করেননি। বরং তারা অভ্যাসগতভাবে অপকর্ম সাধন করে চলেছে ।
এছাড়া, লিখিত পত্রে এই অশুভ চক্রের ফাদে না জড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান করা হয়। একই সাথে এই মহলকে তাদের তৎপরতা থেকে বিরত থাকার কথা জানানো হয়।
সান নিউজ/এনকে