রবি প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে কতিপয় সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থী লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিসিক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে।
কথিত দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং ক্লাস-পরীক্ষা পণ্ড করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু জাফর, সাংস্কৃতি ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান এবং একই বিভাগে শামীম হোসেন প্রমূখ এই সকল আন্দোলন নাটকের ঘটনার নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানা যায়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপরোক্ত কতিপয় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস উত্তপ্ত ও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে নানাভাবে বিভিন্ন আন্দোলনকে উস্কে দেয় এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রদান করে একপেশে কথিত দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ব্যাহত করছে।
এবং ইতোপূর্বে চুল কাটার ঘটনাকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে মিথ্যা আন্দোলনের হোতা শামীম হোসেন নিজে মাথা ন্যাড়া করে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা করে এবং বিষ খাওয়ার অভিনয় করে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। যেখানে বিষ না খেয়ে সাধারণ স্যালাইন নিয়ে হাসপাতালের ভর্তির অভিনয়ের করে বলে জানা যায়। এবং খোজ নিয়ে জানা যায়, যে ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে চুলকাটার ঘটনার অভিযোগ আসে উপরোক্ত শামীম হোসেন সেই ব্যাচের শিক্ষার্থীই নন। কিন্তু শামীম হোসেন ও তার সহযোগীরা তার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রদান করে ভাইরাল করে এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে।
এই বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রবীন্দ্র অধ্যয়ন, সাংস্কৃতি ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, কতিপয় এই সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের মিথ্যা আন্দোলন নাটকের ফলে আমরা সঠিক সময়ে পরীক্ষায় বসতে পারছিনা। এবং বিভিন্ন সময় নানাভাবে তাদের মনগড়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত আন্দোলনে উপস্থিত না হলে নানাভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে মেসে এসে চাপ সৃষ্টি করে। ইতোপূর্বে এই সিন্ডিকেট চুলকাটার আন্দোলনের নামে রাতভর ক্যাম্পাসে অবস্থান করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায়।
আজ দুপুরে সাধরণ শিক্ষার্থী রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ডলফিন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আরেফিন, রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিয়ান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর ও তাদের সহযোগীরা কথিত সেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দ্রুত পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলে একপর্যায়ে সুবিধাভোগী সেই সকল শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়ে উঠে এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কতিপয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী দ্বারা লাঞ্চিতের ঘটনা সম্পর্কে আমি জেনেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে লিখিত অভিযোগ আসলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, যখন মহামারি করোনার প্রকোপ শেষে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করছে সেখানে কথিত আন্দোলনের নামে গুটিকয়েক শিক্ষার্থী অনাকাংখিত নানা ধরনের ঘটনার জন্ম দিয়ে রবীন্দ্র বিশবিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত করছে। কতিপয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নাটকের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যেতে চান তারা এবং সেই সকল শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিও জানান।
এছাড়াও তারা জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও পূর্ণ মেয়াদে উপাচার্য নিযুক্ত না হওয়ায় এই সংকটের সহসা সমাধান দেখছেন না তারা। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি জানান।
সাননিউজ/এমআর