নিজস্ব প্রতিনিধি, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাদে রাতভর নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামি এম সাজিদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উক্ত বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকার নিজ মেস থেকে এ শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আসেন বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র । বিভাগের সিনিয়র ও কতিপয় কিছু অপরিচিতজন সহ প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
অভিযুক্ত কিছুজনের মধ্যে- নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (কিবরিয়া), মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তপু ও রুবেল ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীসূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শামসুজ্জোহা হলের ছাদে সাজিদকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভাগ ও অন্য বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র মিলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। পরে ভোর ৪টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ পরবর্তী ভুক্তভোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, সাজিদ ও বিভাগের সিনিয়রদের সম্পর্ক ভালো না। সে বন্ধুদের বেশি সময় দেয়,বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক ভালো। তার প্রতি বিভাগের বড়ভাইয়েরা ঈর্ষাকাতর । সম্ভবত এ কারণেই তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (কিবরিয়া) নির্যাতনের বিষয় অস্বীকার করেন। কিবরিয়া বলেন, গতরাতে জোহা হলের ছাদে বিভাগের বড়ভাই ও প্রথম বর্ষের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন ছিলেন। সাজিদকে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।
নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ড. আমিরুজ্জামান বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি বিভাগের বেশকিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী সাজিদকে রাতভর শারীরিক নির্যাতন করেছে। মানিসকভাবেও তাকে বেশ হ্যারেজ করা হয়েছে। তবে যারা করেছে তাদের সবার নাম আমাদের এখনো হাতে আসেনি। বিষয়টি পুরোপুরি জানার পর আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সোহেল রানা বলেন, সাজিদকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে । সে স্বাভাবিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। ঠিকঠাক কথা বলতে পারছে না। খুব ভীতি অবস্থা বিরাজ করছে তার মনের মধ্যে । আমরা তাকে কিছু ঔষুধ খাওয়াইছি, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি ও কিছু ঔষুধের পরামর্শ দিয়েছি। বিশ্রাম নিলে ও মানসিক সাপোর্ট পেলে আস্তে আস্তে সেরে উঠবে সাজিদ ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এ ঘটনার তদারকি করছেন। বিয়ষটি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সান নিউজ/এমকেএইচ