নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী: বোয়ালমারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের একমাত্র সরকারি নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক-কর্মচারীর অপ্রতুলতা রয়েছে।
প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে ধুঁকে ধুঁকে চলছে অর্ধশত বছরের পুরনো এই নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে নিয়মিত শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৬ জন। আর গণিত, ইংরেজির মত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং দুর্বোধ্য বিষয়ের শিক্ষকের পদ শূন্য।
জানা যায়, বোয়ালমারী পৌর সদরের গোহাটা এবং খেলার মাঠ সংলগ্ন বোয়ালমারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬শ ৫৪ জন। ১৯৬৫ সালে স্থাপিত এবং ১৯৮৮ সালে জাতীয়করণকৃত এই প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১৩৯ জন, ৭ম শ্রেণিতে ১৪২ জন, ৮ম শ্রেণিতে ১৩৬ জন, ৯ম শ্রেণিতে ১৪১ জন এবং ১০ম শ্রেণিতে ৯৭ জন ছাত্রী অধ্যয়নরত।
ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান দেয়া এই নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকের পদ ১১। অথচ গণিত, ইংরেজি, বাংলাসহ ৫ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন শিক্ষক। এমনকি দপ্তরি, অফিস সহকারী, নৈশ প্রহরীর পদও শূন্য। নিয়মিত ৬ জন এবং খণ্ডকালীন ৪ জন শিক্ষক দিয়ে কোনমতে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। নিয়মিত শিক্ষক শিক্ষার্থীর অনুপাত হচ্ছে ১:১০৯ আর খণ্ডকালীন শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক শিক্ষার্থীর অনুপাত হচ্ছে ১:৬৫।
সূত্র মতে, মাধ্যমিক শিক্ষাখাতের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত হওয়ার কথা ১:৩০। এমনকী জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ সেই পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছিলো এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০১৮ সালকে নির্ধারণ করা হয়েছিলো।
বড় শহরের সরকারি স্কুলে শিক্ষকের কোনো পদ খালি না থাকলেও বোয়ালমারীর মতো প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত এই সরকারি স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি লেগেই আছে বছরের পর বছর। গত পাঁচ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক এবং দুই বছরের অধিক সময় ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য।
২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে প্রধান শিক্ষক নেই। আর সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই থেকে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ টি এম চুন্নু মিয়া ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ টি এম চুন্নু মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারির সংখ্যা অপ্রতুল। জনবল সংকটের কারণে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের শূন্য পদ পূরণের জন্য গত সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক বরাবরে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন। খুব শীঘ্রই সমস্ত শূন্য পদ পূরণ করা হবে।
সান নিউজ/এফএইচপি