নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে শনিবার (০৬ জুন) থেকে এ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণেই ভর্তি প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
নতুন করে কবে নাগাদ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. হারুন উর রশীদ শনিবার (০৬ জুন) জানান, ভর্তি বিষয়ে আমরা শিক্ষাবোর্ড থেকে গত ২৭ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা চেয়ে পত্র দিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা এখনো আমরা পাইনি। পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবোর্ড থেকে জানা গেছে, ২৭ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবরে লেখা ঢাকা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হকের ওই চিঠিতে বলা হয়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনপত্র অনলাইনে ছাড়ার সম্ভাব্য সময় ৬ জুন ধরা হলেও সারাদেশে করোনা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
একাদশের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হলে অনলাইনে আবেদনের জন্য ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকান ও সাইবার ক্যাফেতে ভিড় করবে। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হবে। এছাড়া ভর্তির প্রয়োজনে অন্তত একবার সংশ্লিষ্ট কলেজে শিক্ষার্থীদের স্বশরীরে যেতে হবে।
অথচ, সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। এসব বাস্তবতার আলোকে একাদশের ভর্তি নিয়ে করণীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চাওয়া হয় ওই চিঠিতে।
শিক্ষাবোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা জানান, ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ১৬ আগস্ট একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। তবে করোনার কারণে সব সূচি এলোমেলো হয়ে গেছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের এতদিন ফলের অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছিল। এখন অপেক্ষায় থাকতে হবে একাদশে ভর্তির জন্য।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এ বছর সারাদেশে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা গতবছর ছিল ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এ বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন, যা গত বছর পেয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন।
ফলাফলে দেখা গেছে, এবার এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে।বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যমতে, সারাদেশে উচ্চ মাধ্যমিকে সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে মোট ১৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৫টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ শাখায় রয়েছে প্রায় ১৩ লাখ। মাদ্রাসায় রয়েছে এক লাখ আট হাজার। ব্যানবেইসের হিসাবে, আসন অনেক খালি থেকে যাবে। আর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের হিসাব মতে, সারাদেশের সব কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে মোট আসন সংখ্যা ১৯ লাখ ৬৬ হাজার। আর এবার পাস করেছে মোট ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন। সে হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিকে আসন ফাঁকা থাকবে দুই লাখ ৭৫ হাজার ৫৭৭টি।
সান নিউজ/ আরএইচ