নিজস্ব প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হননি। ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় আরও দুই সপ্তাহ সময় চান তিনি। তবে তা নাকচ করেছে কমিটি।
কমিটির প্রধান রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল শুক্রবার বলেন, বক্তব্য গ্রহণের জন্য তাঁরা মোবাইলে ফারহানা ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে এসএমএস ও ই-মেইলের মাধ্যমে চিটি পাঠানো হয়েছিলো। এর জবাবে তিনি ‘মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত’ হয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করে দুই সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার কমিশনসহ সরকারি বিভিন্ন আইনি প্রতিষ্ঠানের চাপ থাকায় দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে ৭ অক্টোবরের মধ্যে তাঁকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু সেদিনেও তিনি তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন না করে ই-মেইলের মাধ্যমে আবারও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই সপ্তাহের সময় চেয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিলো গত রোববার। এ বিষয়ে লায়লা ফেরদৌস বলেন, তদন্তের কাজ শেষ। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এখন পর্যন্ত তাঁর বক্তব্য দিতে আসেননি। তদন্তের কাজে শিক্ষকের বক্তব্য আসলে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যাদের বক্তব্য গুরুত্ব বহন করে, তাদের সবার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মানবিক কারণে শিক্ষক ফারহানাকে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে। তিনি সশরীর উপস্থিত না হয়েও লিখিতভাবে তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করতে পারতেন। এখন সময় না থাকায় আগামী সোমবারের (১১ অক্টোবর) মধ্যে প্রতিবেদন জমাদানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা গত রোববার সকাল থেকে ভুক্তভোগী ১৪ ছাত্রসহ প্রত্যক্ষদর্শী ১৫ শিক্ষার্থী, ৩ শিক্ষক, ৫ কর্মচারী ও ৫ জন অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি গত তিন বছরে অভিযুক্ত শিক্ষকের ‘স্বেচ্ছাচারিতা’র বর্ণনা দিয়ে সাক্ষ্য দেন বিভিন্ন বিভাগের আরও আট শিক্ষার্থী। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানার অপসারণ দাবিতে আন্দোলন ও অনশন শুরু করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার আবদুল লতিফ বলেন, যদি অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁর বক্তব্য দিতে না আসেন, তাহলে তো সবকিছু ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সিনেট সভায় পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এফএআর