নিজস্ব প্রতিবেদক: স্কুলে, কলেজে নিয়োগ-বদলি-এমপিওভুক্তিসহ বিভিন্ন কারণে ঘুষ দিতে হয় ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)র প্রতিবেদনে এ অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এমন ঢালাও অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, টিআইবির এই প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। তাই এর কোনো গ্রহণযোগ্যতাও নেই।
মাধ্যমিক শিক্ষা খাতের নানা অনিয়ম নিয়ে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে টিআইবি।
সংস্থাটির দাবি, ১৮টি উপজেলার ৫৪টি স্কুলের তথ্য এবং নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশ করা সহকারী শিক্ষকদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় প্রধান শিক্ষক বা পরিচালনা কমিটিকে। শিক্ষক এমপিওভুক্তিতে পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ পর্যন্ত টাকা দিতে হয়।
আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষার কাজে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের এক মাসের এমপিওর টাকা দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) সংশ্লিষ্ট কমর্কতাদের। আর শিক্ষক বদলিতে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হয়।
এ টাকা দিতে হয় মধ্যস্বত্বভোগী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। আর প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতির জন্য ১ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ এবং স্বীকৃতি প্রদানে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে হয় নিয়মের বাইরে। এর মানে প্রচলিত অর্থে এগুলো ঘুষ।
প্রতিবেদনে মাধ্যমিক শিক্ষায় নানা ধরনের অনিয়ম, সীমাবদ্ধ ও ভালো–মন্দের চিত্র তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে করণীয় নির্ধারণে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক তাসলিমা আক্তার।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি গুণগত গবেষণা। বেশির ভাগ তথ্যদাতা এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে। তারা আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ গবেষণার সুপারিশগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব দেবে।
এক্ষেত্রে ঘুষের টাকা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পরিচালনা পর্ষদ, অধিদপ্তর, বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নানা ধাপে দিতে হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, যে প্রতিবেদনটার কথা বললেন সেই প্রতিবেদনটিতে আমি যতদূর পড়েছি তাতে আমার মনে হয়েছে সেখানে ঢালাওভাবে মন্তব্য করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট মন্তব্য ও তথ্য সেখানে নেই।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখন কঠোর অবস্থান দাবি করে মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এফএআর