নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারীতে দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও শর্তসাপেক্ষে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রমে যাওয়ার আগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপক্ষে এক ডোজ টিকা গ্রহণ বা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে হবে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক নির্দেশনায় এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
কমিশনের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় টিকা সংক্রান্ত শর্ত মেনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্যাম্পাস খুলতে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে জানানো হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারদের পাঠানো নির্দেশনায় ইউজিসি জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস, পরীক্ষাসহ অন্যান্য শিক্ষা কাযক্রম চালু রাখতে পারবে।
মহামারীকালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এতদিন অনলাইনে ক্লাশ ও পরীক্ষা চালু রেখেছে। বিভিন্ন সেমিস্টারে শিক্ষার্থীও ভর্তি করেছে।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসি ও উপাচার্যদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির এক বৈঠকে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল খুলে দেওয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রক্রিয়া হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করতেও বলেছে।
এ জন্য সরকার শিক্ষার্থীদের বয়স এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের শর্তও শিথিল করে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে।
দেশে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় ২০২০ সালের মার্চে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার।
এরপর সংক্রমণ কিছুটা নিম্নমুখী হলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও মহামারী আবার বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করা হয়।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ বছর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাসে ফিরেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ক্যাম্পাস ও হল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্তের পর একে একে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল খুলে দিতে পদক্ষেপ নেয়।
শুক্রবার ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের হলে ওঠার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে টিকা গ্রহণ সাপেক্ষে পরে সব শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেওয়া হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ৫ অক্টোবর থেকে এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
অন্তত এক ডোজ টিকা দেওয়ার সনদ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও সেমিনার লাইব্রেরিতেও যেতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
আর মহামারী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও টিকাদানের ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সান নিউজ/এফএআর