নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৬ মে। চার মাস হতে চললেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখনো নিয়োগ হয়নি উপাচার্য। রুটিন দায়িত্বে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে কাজ চালালেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে একের পর এক উপাচার্য পদের প্রার্থীদের তালিকা ফাঁস হয়ে হচ্ছে। কিন্তু পূরণ হচ্ছে না পদটি। যা নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন প্রার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, যখনই কোনো প্রার্থীর নাম ফাঁস হচ্ছে, তখন সেই সব প্রার্থীদের বিরুদ্ধ কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার জটিলতা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রার্থীদের তালিকা ফাঁস হওয়া সরকারের জন্য যেমন বিব্রতকর, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য লজ্জার বিষয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য তিনজন প্রার্থীদের নাম শোনা যায়। এই তিনজন প্রার্থী হলেন- প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সাব্বির ছাত্তার তাপু ও সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এসব নাম জানা গেছে উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইতোমধ্যেই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আর সংবাদ প্রকাশের পর এই প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি।
এর আগে, আরো তিন জন প্রার্থীর বিষয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। সেই তিনজন প্রার্থী ছিলেন- ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রকিব আহমেদ, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সারওয়ার জাহান সজল ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাত আরা বেগম।
তবে একের পর এক প্রার্থীদের তালিকা ফাঁস হলেও নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি উপাচার্য।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, যেহেতু উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি প্রথম পর্যায়ে গোপন থাকে, সে কারণে প্রার্থীদের তালিকা ফাঁস হওয়াটা সকলের জন্য বিব্রতকর। সরকারের উচিত আরো গোপনীয়তা রক্ষা করা।
এ বিষয়ে অন্য আরেকজন শিক্ষক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণেই মূলত জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যদি সিনেট নির্বাচন করে প্যানেলের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হতো, তবে এই জটিলতা অনেকটাই কমে আসত।
এদিকে উপাচার্য প্যানেলের তালিকা ফাঁস হওয়াতে বিব্রত স্বয়ং উপাচার্য প্রার্থীরাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, উপাচার্য নিয়োগের আগেই যখন এভাবে আমাদের নাম প্রকাশ হচ্ছে, তখন আমাদের সকলের জন্যই এটা ক্ষতির কারণ হয়ে যাচ্ছে। যারা আমাদের পছন্দ করে না, তারা নানা রকম গল্প-কেচ্ছা আমাদের বিরুদ্ধে ছড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, প্রার্থীদের তালিকা গোপন রাখতে না পারা সরকারের উচ্চ মহলের এক ধরনের ব্যর্থতাই বলতে হয়। দীর্ঘদিন উপাচার্য পদটি শূন্য থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে রয়েছে। কিছুদিন পর কোষাধ্যাক্ষ পদটিও শূন্য হতে যাচ্ছে। সব বিষয় বিবেচনা করে সরকারের উচিত গোপনীয়তা রক্ষা করে অতি দ্রুত উপাচার্য পদ পূরণ করা।
সান নিউজ/এফএআর