নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ লকডাউনের ফলে উন্নত দেশগুলোর রেস্টুরেন্ট ও দোকান পাট বন্ধ। এইসব রেস্টুরেন্ট গুলোতে অবসর সময়ে চাকরি করে জীবিকা চালতো শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এইসব এখন বন্ধ থাকায় কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। তাই অনেকে এখন অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পথ বেছে নিয়েছেন।
এমন অবস্থায় এসব শিক্ষার্থীকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে দেহপসারিণীদের ইউনিয়ন ইংলিশ কালেকটিভ অব প্রস্টিটিউটস (ইসিপি)। তারা বলেছে, তাদের কাছে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ পড়ুয়া বহু যুবতী সাহায্য চেয়ে হেলপলাইনে যোগাযোগ করছেন। তারা অর্থের বিনিময়ে দেহ ব্যবসা করতে চান। সেই অর্থ দিয়ে এসব শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনার ফি পরিশোধ করতে চান।
শিক্ষার্থীদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে ইসিপি আরও বলে, এ বছর দেহ দানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনকারী এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা এরই মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেহপসারিণীদের অধিকার বিষয়ক ওই গ্রুপটি আরো বলেছে, লকডাউন দেয়ার ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। ফলে দেহ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জনকারী যুবতী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ খবর দিয়েছে বৃটেনের একটি অনলাইন ট্যাবলয়েড পত্রিকা। এতে বলা হয়েছে, অনেক শিক্ষার্থী নিজের নগ্ন ছবি বিভিন্ন সাইটে বিক্রি করছে। কারণ, বার এবং দোকানপাটে তাদের জন্য কোনো কাজ নেই। তাই প্রতিদিন এভাবে অর্থ উপার্জন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ চেয়ে প্রতিদিন ৮ জন যুবতী শিক্ষার্থী ওই ইসিপি’র কাছে ফোন করছেন। এক্ষেত্রে কোনো কোনো ইউনিভার্সিটি নির্দেশনা প্রকাশ করছে। তাতে বলা হয়েছে, কিভাবে নিরাপদে দেহ বিক্রি করতে হবে।
ইসিপির মুখপাত্র লরা ওয়াটসন বলেছেন, টিউশন ফি পরিশোধ করতে পতিতাবৃত্তিতে যুবতী শিক্ষার্থীদের যুক্ত হওয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের এই গ্রুপে যেসব যুবতী যুক্ত হয়েছেন তারা কমপক্ষে ৩০ হাজার পাউন্ড ঋণ পরিশোধ করতে এ পেশায় এসেছেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে অসংখ্যা নারী তার চাহিদা মেটাতে যৌনকর্মকে বেছে নিতে শুরু করেছেন। পাব এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এসব যুবতীর সামনে কোনো বিকল্প খোলা নেই। তাই তারা বেঁচে থাকার জন্য এসব কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসিপি। তখন থেকেই তারা যৌনকর্মীদের প্রতি বৈষম্যের প্রতিবাদে, তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মিসেস ওয়াটসন বলেন, প্রথমবার লকডাউন দেয়ার পর গণহারে যুবতীরা অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত হন। এক্ষেত্রে অনেক যুবতী হয়রানির শিকারও হচ্ছেন। কোনো কোনো যুবতীর কন্টেন্ট চুরি করে তা আবার পোস্ট করেছে অন্যজন।
অন্যরা বলেছেন, ক্লায়েন্টরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য পেয়ে যায় কোনো না কোনোভাবে। তারপর তারা সেটা অন্য ফোরামে পোস্ট করে। করোনা মহামারিকালে এমনই একটি ওয়েবসাইট ফুলেফেঁপে উঠেছে। সেখানে বাণিজ্য হয়েছে ৭২ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের। ওই সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা এসেক্সের ব্যবসায়ী টিম স্টোকলি। ডিসেম্বর নাগাদ তার ওই সাইটে ১০ লক্ষাধিক যুবক-যুবতী তাদের প্রাইভেট ছবি পোস্ট করেছেন। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ২০ হাজার। ফলে যে পরিমাণে এতে শিক্ষার্থী যুবতীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছর ৩২০০ শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, শতকরা ৪ ভাগ শিক্ষার্থী তাদের যৌনতা বিক্রি করেছেন কোর্স ফি পরিশোধ করার জন্য। প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন বলেছেন, তারা এটা করছেন নগদ অর্থের প্রয়োজনে।
সাননিউজ/জেআই