নিজস্ব প্রতিনিধি, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সশরীরে প্রতীকী ক্লাস নিয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, করোনাকালে শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সরকারের যে ভাবনা, আমি মনে করি তা যৌক্তিক না। এটা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত, অন্যদের সঙ্গে কথা বলা উচিত।
সোমবার (১৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিভাগের সামনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি এ ক্লাস নেন।
আজ সকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের দক্ষিণ পাশে বিভাগের সামনে একটি টেবিল, ডায়াস ও কয়েকটি বেঞ্চ নিয়ে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন ‘মিডিয়া ও ক্ষমতা’ বিষয়ে ক্লাস নেন। পরে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ এবং ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম সংহতি জানিয়ে কথা বলেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৪ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
ক্লাসের শুরুতে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতি সোম ও মঙ্গলবার এখানে প্রতীকী ক্লাসের আয়োজন করা হবে। এখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের ভাবনাচিন্তা বিনিময় করা হবে। এখানে মূলত সাধারণ কিছু বিষয়ে কথা বলা হবে, যেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ বা অন্য যেকোনো শিক্ষার্থী যোগ দিতে পারেন।
প্রতীকী ক্লাস শেষে আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের ভাবা দরকার যে শিক্ষকেরা, শিক্ষার্থীরা কী ভাবছে। বলা হচ্ছে যে টিকা দেয়ার পর নাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু টিকা তো সবাইকে দিতে পারছে না। আর স্কুলের শিক্ষার্থীদের তো টিকা দিচ্ছে না। তাহলে তাদের স্কুল দেড় বছর বন্ধ রাখার কী মানে? কিন্তু সারা বাংলাদেশে সবকিছু খোলা আছে। তাই আমরা প্রতীকীভাবে এটা চালিয়ে যাব।
এদিকে প্রতীকী ক্লাস শুরুর আগে আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে প্রক্টর মো. লিয়াকত আলী ও দুজন সহকারী প্রক্টর দেখা করেন। সেখানে মতিহার থানা-পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক বখতিয়ার আরও বলেন, এখান থেকে এ বার্তা দেয়া প্রয়োজন যে বর্তমান অবস্থায় আমাদের মনে সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে, শিক্ষা নিয়ে যথেষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে কি না। কারণ, মহামারি মোকাবিলার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকা জরুরি। আমরা কেবল জনগণের সচেতনতার ওপর দায় চাপিয়ে চলে যাচ্ছি। অথচ এ রকম যেকোনো মৌলিক বিষয়ে সচেতনতার শুরু হয় একেবারে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকে শুরু করে মহামারি নিয়ে গবেষণার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইনে চালু রাখার মাধ্যমে একটা কৌশলগত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, আমরা সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কেবল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। তিনি বলেছেন যে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন। তখন আমরা চলে এসেছি।
সান নিউজ/এফএআর