নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোয় ১০ শিক্ষার্থীকে মারধর করে গুরুতর জখম করায় মাদরাসাশিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কে এ খান হাফেজি মাদরাসার অভিযুক্ত শিক্ষককে গতকাল শনিবার রাতে এলাকাবাসী পুলিশে সোপর্দ করেন।
করোনাকালে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কে.এ খান হাফেজী মাদরাসা চালু রেখে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন মাদরাসাটির শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। গতকাল দুপুরে শিশু-কিশোর বয়সী শিক্ষার্থীরা দুষ্টুমী করছিলো। ওই সময় ঘুমিয়ে থাকা শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহর ঘুম ভেঙে যায়। তাই সে ক্ষেপে গিয়ে কক্ষের দরজা আটকে ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে বেদম প্রহার করেন। বেত্রাঘাতের পর শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি শুরু করে। এসময় সকল শিক্ষার্থীকে কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন ওই শিক্ষক।
মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। মাগরিবের নামাজের সময় পিছন থেকে সুকৌশলে নলছিটি উপজেলার বারৈকরন গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে সিয়াম (৯) পালিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পোনাবালিয়া বাজারে যায়। এসময় এলাকাবাসী মাদরাসার সামনে একত্রিত হন।
এদিকে, মাদরাসা শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মোরশেদ খানকে ঘটনাটি জানিয়ে দ্রুত সকল শিক্ষার্থীকে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
অপরদিকে, পোনাবালিয়া বাজারের অন্তত দুই শতাধিক ব্যক্তি মাদরাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে এবং গুরুতর জখম হওয়া চার শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম (১০), মোহাম্মদ সিয়াম (৯), আমিনুল (৯) এবং একই গ্রামের ইয়াছিনকে (১৪) উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শিশু সিয়ামকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহত অপর শিক্ষার্থীরা যে যার বাড়িতে চলে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদরাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে ধরে নিয়ে আসেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। শিক্ষার্থী পেটানো এবং সরকারের নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সান নিউজ/এফএআর