নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারির মধ্যে এক সঙ্গে ছয় মাসের উপবৃত্তির টাকা পেয়েছে প্রাথমিকের এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী। টাকা পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া জামা-জুতা কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে কিউস অ্যালাউন্স হিসেবে আরও এক হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই আরও তিন মাসের উপবৃত্তি মায়েদের নগদ অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এ ছয় মাসের উপবৃত্তির টাকা একসঙ্গে মায়েদের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গেছে। প্রতি কিস্তি (তিন মাস অন্তর) উপবৃত্তি বিতরণ করতে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। ওই হিসেবে দুই কিস্তির (৬ মাস) ৯০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থীকে জামা ও জুতা কেনার জন্য এককালীন এক হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে। এ খাতে আরও ১১০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ ও ঈদের আগে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। করোনার এ দুঃসময়ে এই অর্থও অনেক পরিবারে খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে বলে জানান উপকারভোগীরা।
জানা গেছে, নানা কারণে অনেক দিন আটকে ছিল সরকারের উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম। তবে গত বছর ডিসেম্বরে দ্রুততার সঙ্গে দেড় কোটি শিক্ষার্থী আর তার পরিবারের তথ্য সম্বলিত ডেটাবেজ তৈরি করা হয়। সেটি ব্যবহার করেই গত মার্চ থেকে উপবৃত্তি পৌঁছে যেতে শুরু করে শিক্ষার্থীদের মায়ের নগদ অ্যাকাউন্টে।
একে একে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকসহ ২০২০-২১ অর্থ বছরের চারটি প্রান্তিকের উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে আবার শিক্ষার্থী প্রতি এক হাজার টাকা করে শিক্ষা উপকরণও বিতরণ করা হয়। নগদ-এর মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ করায় স্বচ্ছতা যেমন নিশ্চিত হয়েছে তেমনি সরকারের বিতরণ খরচ প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে।
প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. ইউসুফ আলী বলেন, নানা জটিলতায় গত বছরের ৯ মাসের উপবৃত্তি বকেয়া হয়ে যায়। এর মধ্যে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের দ্বিতীয় কিস্তির বকেয়া টাকা গত এপ্রিলে ছাড় হয়। বাকি ছয় মাসের টাকা বিতরণ করা শেষ। এরসঙ্গে এককালীন এক হাজার টাকাও বিতরণ করা হয়েছে। ২০২১ সালে প্রথম কিস্তি (জানুয়ারি-মার্চ) মাসের টাকা বিতরণের প্রস্তুতির চলছে। খুব শিগগিরই এ টাকাও মায়েদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, সরকারের একান্ত প্রচেষ্টায় করোনার মধ্যে মহামারি মধ্যে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে। যা ঝরে পড়াসহ শিক্ষার মান রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, দেশের মানুষকে সবচেয়ে সহজে সেবা বিতরণের অঙ্গীকার নিয়ে নগদ যাত্রা শুরু করে। সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই গোটা কাজটা করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিকের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ৫০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেয়া হতো। এখন তা বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক স্তরের এক সন্তান বিশিষ্ট পরিবারের মাসিক উপবৃত্তি ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। দুই সন্তান বিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৩০০ টাকা, তিন সন্তান বিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৪০০ টাকা ও চার সন্তান বিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
সাননিউজ/এমএইচ